ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মেহেদির নকশায় উৎসবের রঙ

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ২৫ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মেহেদির নকশায় উৎসবের রঙ

প্রতীকী ছবি

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর : উৎসব মানেই রঙ। আর সেই রঙ আরো গাঢ় করে তোলে মেহেদির নকশা।

হাত জুড়ে একটু ভরাট, দীর্ঘ কারুকার্যময় জটিল ডিজাইন ঈদ, পূজা বা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। তাইতো মেহেদি ছাড়া উৎসবের কথা যেন চিন্তা করাই যায় না। আর ঈদ উৎসবে জমজমাট চাঁদরাতে হাতে মেহেদির রঙ লাগবে না তাই কি হয়!

বর্তমানে তো রঙ ঢং-এর মেহেদির সঙ্গে গ্লিটার ও স্টোনের ব্যবহার যোগ করেছে আলাদা সমীকরণ। পছন্দমতো মোটিফ মাথায় রেখে পুরো হাত সাজানো। ডিজাইনের জন্য ক্যালিগ্রাফিক, ফুলেল, চরকা, পানপাতা, কলকা, ময়ূর, জ্যামিতিক মোটিফ সবসময়ই জনপ্রিয়। অনেকে আবার মেহেদির সঙ্গে নেইলপলিশ ব্যবহার করবেন নখে। আর এই সব মিলিয়ে হাতের আকৃতি ও গঠন অনুযায়ী বেছে নিতে হবে ডিজাইন।

হাতের পাতা বড় হলে ভরাট ও বড় আকৃতির নকশা এবং ছোট হাতে এক পাশে লম্বালম্বি ডিজাইন মানানসই। আঙুল ছোট হলে অনামিকা বা মধ্যমা থেকে কবজির দিকে টেনে ডিজাইন করলে ভালো দেখাবে। আর মেহেদি লাগানোর আগে হাত অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এ সময় কোনো ধরনের ময়েশ্চারাইজার লাগানো যাবে না। শিশুদের জন্য মেহেদি পাতার পেস্ট ব্যবহারই ভালো। কৃত্রিম মেহেদি একেবারেই নয়।

এবারের ঈদে কেমন পোশাক পরছেন, সেটাও বিবেচ্য মেহেদির নকশায়। শাড়ি হলে দুই হাত ভরে মেহেদি পরতে পারেন। সালোয়ার-কামিজ যদি হয়, হাতের তলায় বেশি নকশা দিয়ে, ওপরটা হালকা রাখতে পারেন। কুর্তা বা লম্বা কামিজের সঙ্গে কনুই পর্যন্ত মেহেদি না পরাই ভালো।

ফুলস্লিভ কামিজের সঙ্গে হাতের তালু থেকে শুরু করে নখের ধার ঘেঁষে অনেকে ছোট করে ডিজাইন করে থাকেন। আর বাকি অংশ খালি রাখেন। স্লিভলেস কামিজ এখন খুব জনপ্রিয়। এর সঙ্গে বাহুতে বাজুবন্ধের মতো সুন্দর আলপনা নকশা এঁকে নেন অনেকে।

কিশোরীরা তাদের গয়নার জুয়েলারির সঙ্গে মিলিয়েও মেহেদি পরছে। যেমন আংটির সঙ্গে মিলিয়ে চেইনের মতো করে অনেকে মেহেদি পরে। আবার তালুতে কম মেহেদি দিয়ে আঙুল ভরে ডিজাইন করে অনেকেই।

এছাড়া চেক ধাঁচের নকশা, কোনাকুনি করে হাতের আঙুল থেকে শুরু করে কনুই পর্যন্ত দেয়া যেতে পারে। যেকোনো নকশা করতে পারেন লাল মেহেদি দিয়ে। তবে কালো মেহেদির ক্ষেত্রে এখন জ্যামিতিক নকশা বেশি চলছে।

এদিকে বর্তমানে মেহেদির নকশায় এসেছে ফিউশন। বাইরে কালো মেহেদি দিয়ে আউটলাইন এঁকে ভিতরে লাল মেহেদি দিয়ে ডিজাইন করুন। দেখুন তো, আর দশজনের চেয়ে আপনাকে বেশ খানিকটা আলাদা লাগছে কি না! এছাড়া মেহেদি পরার আগে কিছু ডিজাইন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে চাইলে আপনি নিজেও বের করে নিতে পারেন মন মাতানো আনকোরা ডিজাইন!

ঈদে বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের হাতে মেহেদি লাগানোর আনন্দ-উত্তেজনা আরো বেশি। ছোটদের হাত এমনিতেই সুন্দর ও কোমল। পুরো হাত নকশা করে মেহেদি লাগালে অনেক সুন্দর দেখাবে। ছোটদের হাতে মেহেদির নকশায় সহজ-সরল মোটিফ ব্যবহার করাই ভালো। কোনো একটা থিম বেছে নিয়ে সেই থিমে হাতজুড়ে মেহেদি দিলে দেখতে ভালো লাগবে।

অন্যদিকে যাদের সবেমাত্র বিয়ে হয়েছে, ঈদের দিন তাদের হাতে মেহেদি মানে বিয়ের আমেজটাকেই আরো রাঙিয়ে রাখা। নববধূরা পুরো হাত ভরে মেহেদি দিলে অনেক সুন্দর দেখাবে। মেহেদির নকশায় বউ সাজের ছোঁয়া রাখাই ভালো। এতে নববধূর মেহেদির সাজ আরো আকর্ষণীয় হবে। আর বয়স্করা নিতে পারেন তাদের পছন্দসই নকশার যেকোনো একটি।

মন মাতোনো সব ডিজাইনে মেহেদির গাঢ় রঙের জন্য পেস্টের সঙ্গে চায়ের লিকার ও অল্প লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। ঈদের আগের দিনই মেহেদি পরা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ রঙ গাঢ় হতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। মেহেদি পানি দিয়ে না ধুয়ে ঝেড়ে ফেলুন। ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে পানিও লাগানো যাবে না। একটু সরষের তেল হাতে মেখে নিলে পেয়ে যাবেন আপনার মনের মতো রঙ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জুন ২০১৭/সাগর/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়