ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নিবেদিত প্রাণ এক রাজনীতিবিদ মেয়র হানিফ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৮ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিবেদিত প্রাণ এক রাজনীতিবিদ মেয়র হানিফ

রাইজিংবিডি ডেস্ক: ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুর একযুগ পূর্ণ হলো।

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর তিনি মারা যান। গ্রেনেড হামলাকালে তাৎক্ষনিক আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষায় যে মানব ব্যুহ তৈরি  হয়েছিল, তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম।

সৎ, ন্যায়নিষ্ঠ ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ হিসাবে খ্যাত মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য।

মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়াও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকায় বাণী দিয়েছেন।

প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মোহাম্মদ হানিফ তার কর্মের মাধ্যমে জনগণের হৃদয়ে চিরদিন বেঁচে থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা। সততা, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের গুণে রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি পদে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সফল।’

প্রদত্ত বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তথা বাংলাদেশের একজন নিবেদিতপ্রাণ, ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে মোহাম্মদ হানিফ এদেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় প্রোথিত থাকবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালায়। সেদিন মোহাম্মদ হানিফ মানব ঢাল তৈরি করে আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন। মস্তিষ্কসহ তার শরীরের বিভিন্ন অংশে গ্রেনেডের অসংখ্য স্প্লিন্টার ঢুকে পড়ে। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলেও মস্তিস্কের স্প্লিন্টার নিয়েই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’

মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এসময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। তিনি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া ঢাকা ১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ’৭৬ সালে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ এর মার্চের শেষ সপ্তাহে স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে মোহাম্মদ হানিফ তার বলিষ্ট ও গতিশীল নেতৃত্বে ‘জনতার মঞ্চ’তৈরি করেন যা তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতন সহ আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট তৈরি করে এবং যার ফলশ্রুতিতে ’৯৬-এর ১২জুন দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয় এবং আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।

মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ স্মৃতি সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন আজ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল সাড়ে ১০ টায় আজিমপুর কবরস্থানে কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, দুপুর ১২ টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নগর ভবনে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল সহ ২ সপ্তাহ ব্যাপী মেয়র হানিফ স্বাস্থ্য সেবা পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ।

এছাড়াও আজ বিকাল ৪টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। বাদ আছর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

 





রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ নভেম্বর ২০১৮/শাহ মতিন টিপু

 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়