ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যার সব গানই শ্রেষ্ঠ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ৩১ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যার সব গানই শ্রেষ্ঠ

শাহ মতিন টিপু: মহম্মদ রফি- কোনো একটা গান নয়, তার সব গানই শ্রেষ্ঠ। ৩৫ বছরের সঙ্গীত জীবনে ২৬ হাজারের মতো গান গেয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন। শ্রোতারা সেই সব গান আজও শোনেন।

হিন্দি সিনেমার একটা সময় গান মানেই ছিল মহম্মদ রফি’র গান। অমর এ শিল্পীর প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৮০ সালের ৩১ জুলাই তিনি প্রয়াত হন। মোহাম্মদ রফির শেষ গানটি ছিল ‘আস পাস’ ছবির ‘শ্যাম ফির কিউ উদাস হ্যায় দোস্ত’। এ গানটি রেকর্ড করার কয়েক ঘণ্টা পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রফি।

উপমহাদেশ সেরা এই কিংবদন্তী প্লে-ব্যাক গায়কের জন্ম ১৯২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর অমৃতসরে। মাত্র ছাপ্পান্ন বছরের জীবনেই হিন্দি ছবির প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে এখনও সেরার শিরোপাটি তারই।

মহম্মদ রফির বয়স যখন ১২/১৩ বছর তখন সুপারহিট গায়ক সায়গল। অন্যদিকে সুপারহিট নায়কও। লাহোরের এক স্টেজ প্রোগ্রামে গান গাইবেন সায়গল। হিন্দি ছবির নায়ক-গায়ককে কাছ থেকে দেখতে, তার গান শুনতে লোকে লোকারণ্য।

সবাই অপেক্ষায় শুরু হবে কখন?   অনুষ্ঠান শুরু হতেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট! মাইক অচল। অনুষ্ঠান পন্ড হওয়ার উপক্রম। হাজার অনুরোধেও সায়গল গাইছেন না। তাই লোকজনকে বসিয়ে রাখার জন্য ডাক পড়ল উপস্থিত স্থানীয় শিল্পীদের। সুযোগ পেয়ে ছুটে গেলেন কিশোর রফি। কয়েকটি গান গেয়ে দিলেন নির্ভয়ে। সায়গল সস্নেহে কাছে ডেকে জানতে চাইলেন নাম। কিশোরটি বললেন, মহম্মদ রফি।

রফি সেদিন থেকেই তারকা। সায়গলের আসরে বাজিমাৎ করার পর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্লেব্যাক গায়ক হওয়ার সুযোগ এসে যায় মাত্র ১৭ বছর বয়সে। মুম্বাইতে তার প্রথম ছবি ‘গাও কী গোরি’ (১৯৪২) ।

বৈজু বাওরা ছবির ‘ও দুনিয়াকে রাখোয়ালে’ গানটি মহম্মদ রফিকে রাতারাতি মহাতারকা বানিয়ে দেয়।

মহম্মদ রফিকে সঙ্গীত পরিচালক নওশাদ আলী বলতেন ভারতের আধুনিক তানসেন। মান্না দে বলেছিলেন, ‘রফির মতো গায়ক ভারতবর্ষ আর পায়নি।’

রফির সেরা সময়ে নায়করাই শর্ত জুড়ে দিতেন, তাদের ছবিতে রফির গান রাখতেই হবে। দিলীপ কুমার, রাজেন্দ্র কুমার, রাজ কাপুর, দেব আনন্দ, ধর্মেন্দ্র বা শশি কাপুরদেরও খুব কমই দেখা যেতো অন্য শিল্পীদের গানে ঠোঁট মেলাতে।

গান্ধিজীর প্রয়াণের পরপরই তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রফি গাইলেন ‘সুনো সুনো অ্যায় দুনিয়াওয়ালো, বাপুকি অমর কাহানি’ (১৯৪৮) সে গান শুনে জওহর লাল নেহেরু কেঁদে ফেলেছিলেন।

পাঞ্জাবি, মারাঠি, সিন্ধি, গুজরাটি, তেলেগু, বলতে গেলে ভারতের সব ভাষাতেই গান গেয়েছেন মোহাম্মদ রফি। গেয়েছেন ইংরেজিতেও।

কী গাননি মোহাম্মদ রফি? হিন্দি গানের কোনো শ্রোতাই তার গানের ভুবন ঘুরে এসে বলতে পারবেন না, কই আমার জন্য কিছুই তো গাননি? শাস্ত্রীয় সঙ্গীত,   দেশের গান, বিয়ের গান, কাওয়ালি, ভজন, গজল, রফির এমন গানও আছে যা ধার্মিকদের মোহিত করে। যেমন- ও দুনিয়াকে রাখোয়ালে, ইয়া নবি সালামালাইকা, বৃন্দাবনকা কৃষ্ণা, মন তরপাত হরিদর্শন, বড়ি দের ভাই নন্দলালা এবং মেরি বিনতি সুনো ভাগোয়ান- ইত্যাদি।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জুলাই ২০১৯/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়