ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

যে কীর্তি দেখাতে পারেনি অন্য কেউ

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২০, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যে কীর্তি দেখাতে পারেনি অন্য কেউ

সাইফুল আহমেদ : গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশটিতে কাউকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে কমপক্ষে ২৭০টি ভোট পেতে হয়।

 

এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০৬টি ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রয়োজনের চেয়েও ৩৬টি ইলেকটোরাল ভোট বেশি পেয়েছেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া ট্রাম্প। অন্যদিকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী পরাজিত হিলারি ক্লিনটন পেয়েছেন ২৩২টি ইলেকটোরাল ভোট।

 

২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামা পেয়েছিলেন ৩৩২ ইলেকটোরাল ভোট। এর আগে ২০০৪ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ ২৮৬ ইলেকটোরাল ভোট।

 

বারাক ওবামা ২০০৮ সালেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সেবার তিনি ৩৬৫ ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসের চাবি হাতে পান। তবে তিনিই কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ইলেকটোরাল ভোট পাওয়া প্রেসিডেন্ট নন।

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন রোনাল্ড রিগ্যান। যুক্তরাষ্ট্রের ৪০তম এ প্রেসিডেন্ট ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে একাই পেয়েছিলেন ৫২৫টি।

 

১৯৮৪ সালের ৬ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা এটি। রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রিগ্যান। সেবার মাত্র ১৩টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে ভরাডুবি হয় ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ওয়াল্টার মানডেলের।

 

সেবারের নির্বাচনে রিগ্যান মোট ইলেকটোরাল ভোটের ৯৭.৫৮ শতাংশ পান। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ রাজ্যের মধ্যে ৪৯টিতেই জয় পেয়েছিলেন তিনি। তার পক্ষে পপুলার ভোট পড়েছিল ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ।

 

রিগ্যান এ কীর্তি গড়েছিলেন যখন তার বয়স ছিল ৭৩ বছর। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়াই করা ও সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিও তিনি।

 

দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিগ্যানের স্লোগান ছিল ‘মর্নিং ইন আমেরিকা’। দায়িত্ব পালনকালে তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে ‘শয়তানের সাম্রাজ্য’ হিসেবে আখ্যা দেন। তবে তার নেতৃত্বেই স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। রিগ্যান দ্বিতীয় মেয়াদে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ‘লিবিয়ায় মার্কিন বাহিনীর বোমাবর্ষণ’ ও ‘ইরান-কন্ট্রা বিষয়াবলি’।

 

রিগ্যান ১৯৮০ সালের ৪ নভেম্বরের মার্কিন নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে সেবার তিনি পেয়েছিলেন ৪৮৯ ইলেকটোরাল ভোট। ১৯৮১ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব নেন তিনি।

 

রিগ্যান ১৯১১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের ট্যাম্পিকোতে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের শুরুর দিকে তিনি খেলোধুলায় ঘোষক ও বিভিন্ন রেডিও স্টেশনে কাজ করেন। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে রিগ্যান হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা ছিলেন। তার আলোচিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো ‘লাভ ইজ অন দি এয়ার’, ‘ডার্ক ভিক্টোরি’, ‘সান্তা ফে ট্রেইল’, ‘নুটে রকনে, অল আমেরিকান’। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৬৭-৭৫ পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার গর্ভনর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

 

২০০৪ সালের ৫ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার বেল এয়ারে ৯৩ বছর বয়সে মারা যান রিগ্যান। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সফল প্রেসিডেন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ডিসেম্বর ২০১৬/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়