ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যে ক্রিকেটার দুই দেশের হয়ে খেলেছেন (প্রথম পর্ব)

রুহুল আমিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যে ক্রিকেটার দুই দেশের হয়ে খেলেছেন (প্রথম পর্ব)

রুহুল আমিন : বিশ্বজুড়ে অন্য খেলার মতো ক্রিকেটও বেশ জনপ্রিয় খেলা। আর উপমহাদেশের তো প্রধান খেলা বলা চলে ক্রিকেট। উপমহাদেশের প্রায় প্রতিটি উঠতি তরুণই বোধহয় বর্তমানে স্বপ্ন দেখে ক্রিকেটার হওয়ার। নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার। তবে ক্রিকেটে এমন উদাহরণও আছে যে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় শুধু একদেশ না, দুই দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাও আবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।এমন ১০ জন খেলোয়াড় নিয়ে আমাদের দুই পর্বের প্রতিবেদনে আজ থাকছে প্রথম পর্ব :

১. ইফতিখার আলী খান পতৌদি : ইফতিখার আলী খান পতৌদি যিনি সিনিয়র পতৌদি নবাব হিসেবে বেশি পরিচিত।তিনি একমাত্র খেলোয়াড় যে ভারত ও ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন। ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে সিডনিতে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের হয়ে তার অভিষেক হয়।



অ্যাশেজের ওই অভিষেক টেস্ট ম্যাচে তিনি ১০২ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন। তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরো দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলেন। পরে ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে তিন টেস্ট সিরিজের ইংল্যান্ড সফরের সময় ভারতের নেতৃত্ব দেন।তিনি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মনসুর আলী খান পতৌদির বাবা। আর তার নাতি-নাতনি দুইজন বলিউড স্টার সাইফ আলী খান ও সোহা আলী খান।

২. আব্দুল হাফিজ কারদার : আব্দুল হাফিজ কারদারকে পাকিস্তান ক্রিকেটের জনক পর্যায়ের একজন বিবেচনা করা হয়। তার জন্ম ব্রিটিশ ভারতে।১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে ভারতের হয়ে তার অভিষেক হয়। দেশভাগের পর তিনি পাকিস্তানে চলে যান।



তিনি প্রথম পাকিস্তানি টেস্ট অধিনায়ক যার নেতৃত্বে ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে ভারত সফর করে পাকিস্তান। এছাড়া তিনি জুলফিকার আলী ভুট্টো সরকারের খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং সুইজারল্যান্ডে পাকিস্তানের অ্যাম্বাসেডরের দায়িত্ব পালন করেন।

৩. আমির এলাহী : আমির এলাহী ছিলেন লেগ ব্রেক গুগলি বোলার।১৯০৮ সালে তিনি লাহোরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৭ সালে ভারতের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেন।



১৯৫২-৫৩ মৌসুমে পাকিস্তান টেস্ট স্ট্যাটাস পেলে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। পরে তিনি পাকিস্তানের হয়ে পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ খেলেন। তিনিই প্রথম খেলোয়াড় যিনি প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের জন্য ১ নম্বর ক্যাপ নিয়ে খেলেন।

৪. গুল মোহাম্মেদ : গুল মোহাম্মেদ ছিলেন বাঁহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। ১৯৪৬ সালে ভারতের হয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ম্যাচে তার অভিষক হয়। এ ছাড়া ১৮৪৭-৪৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফর ও  ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সফরেও তিনি ভারত দলের অংশ ছিলেন।



পরে ১৯৫৫ সালে তিনি পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নেন। তারপর তিনি একটিমাত্র টেস্ট ম্যাচ খেলেন পাকিস্তানের হয়ে। তবে সেই ম্যাচটি তিনি স্মরণীয় করে রেখেছেন। কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই টেস্টে তার ব্যাট থেকেই জয়সূচক রানটি আসে।

৫. কেপলার ওয়েসেলস : কেপলার ওয়েসেলস ছিলেন বাঁহাতি ওপেনিং ব্যাটসম্যান। তার জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়। কিন্তু ১৯৮২ সালে ব্রিজবেনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্রিকেট অভিষেক হয় তার। প্রথম ইনিংসেই তিনি ১৬২ রানের অনবদ্য এক স্কোর গড়েন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আরো ২৩ টি ম্যাচ খেলেন।



পরে ১৯৮৫ সালে তিনি অবসর ঘোষণা করেন। তখন দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল। তার অবসরের ছয় বছর পর ১৯৯১ সালে আইসিসি দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর থেকে ২২ বছরব্যাপী লম্বা সময়ের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এ সময় ওয়েসেলসকে তার নিজ মাতৃভূমির জন্য খেলতে অনুরোধ করা হয়। পরে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা দলে যোগ দেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কত্ব পান। তিনি তিন বছর দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়ক ছিলেন। পরে ১৯৯৪ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল)দল চেন্নাই সুপার কিংসের কোচও হয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হিসেবে সুপরিচিত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/রুহুল/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়