ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে নোবেল শান্তি পুরস্কার

মাছুম বিল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৯, ৯ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে নোবেল শান্তি পুরস্কার

মাছুম বিল্লাহ : ২০১৮ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার সময় কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইস-আন্ডেরসেন বলেন, ‘যুদ্ধ ও সশস্ত্র সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ ও প্রচেষ্টার জন্য ডা. ডেনিস মুকওয়েজ ও নাদিয়া মুরাদকে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হলো। বিজয়ীরা ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গঠন ও মনোযোগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।’ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ডেনিস মুকওয়েজ ও নাদিয়া মুরাদ উভয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিয়োজিত হয়েছেন এবং যুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের পক্ষে ন্যায়বিচার আদায়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের কাজের মাধ্যমে শুধু নিজ নিজ মাতৃভূমির পক্ষে সুবিচার প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টাই করেননি, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখ খুলে দিয়েছেন।’

ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কোচো গ্রামের তরুণী নাদিয়া মুরাদকে ২০১৪ সালে আইএস জঙ্গিরা তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন ও ধর্ষণ করেছিল। জঙ্গিরা তাকে তাদের আস্তানায় যৌনদাসী হয়ে থাকতে বাধ্য করেছিল। পরে তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। এখন তিনি ইয়াজিদি জনতার মুক্তি আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। অন্যদিকে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডেনিস মুকওয়েজ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় শহর বুকাভুতে পাঞ্জি হাসাপাতলের পরিচালক। তিনি জীবনের বড় একটি সময় সহকর্মীদের নিয়ে যৌন সহিংসতায় ক্ষত-বিক্ষত নারীদের চিকিৎসা দিয়ে গেছেন। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা ওই হাসপাতালে হাজার হাজার নারী চিকিৎসা পেয়েছেন, যারা নানাভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন। নির্যাতিতা নারীদের চিকিৎসা ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে মুকওয়েজ তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্যালুট নাদিয়া, স্যালুট মুকওয়েজ!

নোবেল শান্তি পুরস্কার ধর্ষণকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটা গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে মনে করেন আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ আহমেদ জিয়াউদ্দিন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এই পুরস্কারের মাধ্যমে এই অপরাধ শুধু স্বীকৃতিই পাবে না, এর মাধ্যমে এই ইস্যুতে বিশ্ববাসীর নজর পড়বে এবং ধর্ষণের শিকার নারীদের বেদনা সবাই উপলব্ধি করতে পারবেন।’ যুদ্ধে ধর্ষিত নারীদের চুপ থাকা এবং লজ্জিত হওয়ার যে অলিখিত সনাতনি প্রথা বিশ্বে বিরাজমান, তা মানতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ইয়াজিদ তরুণী নাদিয়া মুরাদ। তিনি নিজের ওপর চলা যৌন সন্ত্রাস এবং অন্য ধর্ষিতদের ব্যাপারে সাক্ষী হিসেবে যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তা ছিল নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন এবং অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। ২০১৪ সালে তাদের গ্রামের সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়কে নির্মুলের উদ্দেশ্যে আইএস জঙ্গিরা অত্যন্ত সুচিন্তিত ও পাশবিকভাবে উপর্যূপরি আক্রমণ চালায় এবং ওই গ্রামের কয়েক শ মানুষকে হত্যা করে। জঙ্গিরা অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের ছাড়াও তরুণী যুবতীদের ধরে নিয়ে যৌনদাসী হিসেবে বন্দী রাখে। জঙ্গি আস্তানায় বন্দী থাকা অবস্থায় অসংখ্যবার ধর্ষিতা হওয়া ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হন নাদিয়া। জঙ্গিরা তাঁকে তাদের সংস্করণের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত না হলে হত্যার হুমকি দেয়। পাশবিক এই নির্যাতনের তিনমাস পর নাদিয়া সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হন। পালানোর পর তাঁর ওপর যেসব শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল, সে ব্যাপারে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে তিনি ‘ফর দ্য ডিগনিটি অব হিউম্যান ট্রাফিকিং’ হিসেবে জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত মনোনীত হন। মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আমাল ক্লনির সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের হাতে বন্দী ইয়াজিদি নারী ও যারা পালিয়ে এসেছে তাদের নিয়ে কাজ করছেন ২৫ বছর বয়সী নাদিয়া মুরাদ। ইরাকের সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নাদিয়া সমস্ত অত্যাচারিত, নিপীড়িত মেয়েদের অধিকারের জন্য কাজ করছেন, তাঁর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। চালিয়ে যাও নাদিয়া, গোটা বিশ্ব আছে তোমার সাথে।

নারীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে মালালা যখন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান, তার ঠিক দুই মাস আগে ইরাকের পাহাড়ি অঞ্চল সিনজারের একটি ইয়াজিদি গ্রামে হামলা চালিয়ে নাদিয়া মুরাদকে ধরে নিয়ে যায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা। ২০১৪ সালের আগস্টে জঙ্গিরা সিনজার দখল করে। নাদিয়ার বয়স তখন ২১ বছর। জঙ্গিরা নাদিয়াদের গ্রাম কোচোতে হামলা চালিয়ে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। তারা গ্রামের প্রায় সকল পুরুষ ও বয়স্ক নারীদের হত্যা করে। যাদের মধ্যে নাদিয়ার ছয় ভাই এবং তাঁর মা ছিলেন। জঙ্গিরা গ্রামের অন্য ইয়াজিদি নারীদের সঙ্গে নাদিয়াকেও ধরে নিয়ে যায় এবং যৌনদাসী  হিসেবে বিক্রি করে দেয়। নানা হাত ঘুরে একসময় মসুল পৌঁছে যান নাদিয়া। এই সময় তাকে আইএস জঙ্গিরা অসংখ্যবার ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করে। মসুল তখন আইএস ঘোষিত ইসলামী খেলাফতের ইরাক অংশের রাজধানী। নাদিয়া তিন মাস আইএস-এর হাতে বন্দী ছিলেন। ওই সময়ে যৌনদাসী হিসেবে কয়েকবার তাকে বিক্রি করা হয়। প্রথমবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে যান, তারপর তাঁর উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। তাকে আবার বিক্রির চেষ্টা চলছিল। একদিন সুযোগ বুঝে আইএস বন্দিদশা থেকে পালিয়ে এক সুন্নি মুসলিম পরিবারে আশ্রয় নেন নাদিয়া। ওই পরিবার তাকে মসুল থেকে পালিয়ে আসতে সব রকম সহায়তা করে। জীবনের এই অভিজ্ঞতার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে ‘দ্য লাস্ট গার্ল’ নামে একটি বই লেখেন নাদিয়া যা ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়। ওই বইয়ে তিনি লেখেন, কখনও কখনও ধর্ষিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই সেখানে ঘটত না। একসময় এটি প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছিল।’

জার্মানির একটি শরণার্থী প্রকল্পের আওতায় ২০১৫ সালে আরও এক হাজার নারী ও শিশুর সঙ্গে জার্মানিতে চলে যান নাদিয়া। বর্তমানে সেখানেই তিনি বাস করছেন। তারপর থেকেই তিনি ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলন নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি মানবাধিকার এবং যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ধর্ষণের ব্যবহারের বিরুদ্ধেও কাজ শুরু করেন। এ লক্ষ্যে তিনি ‘নাদিয়াস ইনিশিয়েটিভ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আইএস-এর বিরুদ্ধে ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন। আন্তর্জাতিকভাবে ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মুক্তি এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রচারের প্রতীকে পরিণত হওয়া নাদিয়া ২০১৬ সালের অক্টোবরে ইউরোপীয় কাউন্সিলের ‘ভ্যাকলাভ হ্যাভেল’ নামে এক মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত হন।

অপরদিকে গণধর্ষণের শিকার হয়ে ক্ষতবিক্ষত হওয়া নারীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ডেনিস মুকওজের সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় বুকাভু শহরে তাঁর পিঞ্জি হাসপাতালে নারীদের ফিস্টুলা অপারেশন করতেন। নারীদের প্রস্রাবের রাস্তা ছিঁড়ে পায়খানার রাস্তার সঙ্গে এক হয়ে যাওয়ার রোগের নাম ফিস্টুলা। ফিস্টুলায় আক্রান্ত রোগীরা প্রস্রাব আটকে রাখতে পারে না। ফলে অনবরত প্রস্রাব পড়তে থাকে। এমন বহু নারীর দেহে অস্ত্রোপচার করে তিনি তাঁদের ফিস্টুলা সারিয়ে তুলেছেন। এসব নারীরা শুধু প্রসবজানিত কারণে নয় বরং গণধর্ষণ ও ছুরি দিয়ে আঘাত করার কারণে ফিস্টুলায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম দিকে তিনি শুধু তাঁদের সারিয়ে তোলার কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু পরে এ ধরনের নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আন্দোলন শুরু করেন। ক্রমে ক্রমে তিনি ব্যাপকভাবে আলোচনায় উঠে আসতে থাকেন। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন এসব ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের জন্য দায়ী বলে তিনি অভিযোগ করেন। এতে তাঁর নিজের দেশ কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলা তাঁর উপর রুষ্ট হন। প্রতিবেশী রুয়ান্ডার সরকারও তাঁর উপর ক্ষেপে যান। ২০১২ সালে অস্ত্রধারীরা তাঁর পুরো পরিবারকে জিম্মি করার পর তাঁর উপর হমাল চালায়। সেই হামলায় তাঁর গাড়ির চালক নিহত হন এবং তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। ডা. মুকওয়েজ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেছেন গণপ্রজাতান্ত্রিক কঙ্গোতে যৌন সহিংসতার শিকার ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করে। কঙ্গো পাঞ্জি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুকওয়েজ ও তাঁর সহযোগীরা যুদ্ধে সহিংসতার শিকার হাজার হাজার ভিকটিমের চিকিৎসা দিয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগই ছিল কঙ্গোর দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের ভিকটিম, যে যুদ্ধে প্রায় ৬০ লাখ কঙ্গোলিয়ান নিহত হয়। ডা. মুকওয়ে তাঁর দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধ ও সশস্ত্র সংঘর্ষে যৌন সহিংসতা বন্ধের সংগ্রামের একজন প্রতীক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। মুকওয়েজের কাজের মূলনীতি হচ্ছে ‘ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সবার’। পুরুষ ও নারী, কর্মকর্তা ও সেনা, স্থানীয় ও জাতীয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ সবারই এ ধরনের যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ  ও প্রতিবাদ করা যৌক্তিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তিনি শুধু নিন্দা করেই ক্ষান্ত হননি, যুদ্ধের কৌশল ও হাতিয়ার হিসেবে নারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ  ও যৌন সহিংসতার ব্যবহার বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট আন্তরিক না হওয়ায় কঙ্গো সরকার ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তীব্র সমালোচনা করেছেন। আমরাও তাঁর সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, বন্ধ হোক যৌন সহিংসতা, বন্ধ হোক ধর্ষণকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার মতো পশুপ্রবৃত্তি।

২০০৮ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের গৃহীত রেজুলেশন-১৮২০ এর দশ বছর পূর্তি হলো এবার অর্থাৎ ২০১৮ সালে। এই রেজুলেশনে বলা আছে: ‘যুদ্ধে সশস্ত্র সংঘাত হিসেবে যৌন সহিংসতার ব্যবহার একাধারে যুদ্ধাপরাধ ছাড়াও অন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে হুমকি হিসেব পরিগণিত হবে।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রোম-স্ট্যাচিউটে ১৯৯৮ সালে এই সংবিধি সংযুক্ত করে। সংবিধিটি এই মর্মে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে, যুদ্ধে ও সশস্ত্র সংঘাতে যে কোন যৌন সহিংসতা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে পরিগণিত হবে। যুদ্ধে নারীর মৌলিক অধিকার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়া হলে আরো অধিকতর শান্তিপূর্ণ পৃথিবী অর্জন সম্ভব হবে বলে মনে করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। আমরা নোবেল কমিটির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩৩১টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। তাদের মধ্যে থেকে ডেনিস মুকওয়েজ এবং নাদিয়া মুরাদ সম্মানিত হলেন ২০১৮ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে। যুদ্ধের সময় যৌন নিপীড়ন যেভাবে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে এই সম্মান পেলেন কঙ্গোর চিকিৎক ডেনিস মুকওয়েজ এবং ইরাকের নাদিয়া মুরাদ। এটি বর্তমানের সংঘাতময় বিশ্বের জন্য নতুন সংবাদ, নতুন প্রেরণা। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে নারী ও মেয়েরা বর্বর বার্মিজ সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা অমানুষিকভাবে ধর্ষিত হয়েছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন, অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বর্বর পাক বাহিনী আমার দেশের লক্ষ লক্ষ মা-বোনদের উপর একই ধরনের বর্বরতা দেখিয়েছিল। এসব নরপশুদের জন্য এটি একটি সতর্ক বার্তা। গোটা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ এসব বর্বরদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় তাদের দাঁড় করাবে। সেই প্রেরণা বিশ্বাবাসী এবারকার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদানের মধ্যে দিয়ে পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ অক্টোবর ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়