ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রংপুরের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ না থাকায় হতাশা

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ১৩ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রংপুরের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ না থাকায় হতাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে রংপুর বিভাগের আট জেলার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ না রাখায় রংপুর চেম্বার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এরপর সন্ধ্যায় রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রংপুর বিভাগের জন্য পোশাক ও কৃষিভিত্তিক শিল্প জোন গড়ে তোলার পাশাপাশি উন্নয়ন বৈষম্য দূরীকরণে রংপুর বিভাগের আট জেলার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়নি।

পাশাপাশি এ বিভাগের শিল্পায়নে আলাদা ঋণ, কর ও ভ্যাট নীতি প্রণয়ন, বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়া কৃষকদের স্বস্তি দিতে বিশেষ প্রণোদনা, রংপুরে প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও আইটি পার্ক স্থাপন, উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে ‘নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রি’ গঠনের মতো বিষয়গুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত ছিল বলে রংপুর চেম্বার মনে করে।

বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের জন্য তেমন সুযোগ-সুবিধা ও অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব না থাকায় রংপুর চেম্বার হতাশ। তাই রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিষয়গুলো সংশোধিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দাবি জানান তিনি।

এ ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে  ‘আমার গ্রাম আমার শহর কর্মসূচি’ বাস্তবায়নে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বৃদ্ধি, তরুণদের জন্য স্বল্প সুদে ‘স্টার্টআপ ফান্ড’ নামে ঋণ তহিবল গঠন, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি, চিকিৎসা ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা, শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পের মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় বেশ কিছু পণ্যের কাঁচামালের শুল্কহার হ্রাস, রপ্তানি পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি, বিলাস ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বহাল রাখা, হাতে তৈরি বিস্কুট, কেক, রুটি, স্বল্প মূল্যের জুতা এবং দেশীয়ভাবে মোটরসাইকেল ও রেফ্রিজারেটর উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধিতে দেশীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত বিকশিত হবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে রংপুর চেম্বার মনে করে।

প্রতিক্রিয়ায় আরো বলা হয়, যারা ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দেবেন, শুধু তারাই রেয়াত পাবেন। ১৫ শতাংশের নিচে অর্থাৎ ২, ৫, সাড়ে ৭ ও ১০ শতাংশ হারে যারা ভ্যাট দেবেন, তারা রেয়াত সুবিধা পাবেন না। এক পক্ষ রেয়াত পাবে, অন্য পক্ষ রেয়াত পাবে না। একই আইনে দুই পদ্ধতি চালু করা হলে ট্যাক্স অন ট্যাক্স বা করের ওপর কর (দ্বৈত কর) আরোপ করা হবে। তখন পণ্য ও সেবার খরচ বাড়বে, যা ভোক্তার ঘাড়ে এসে পড়বে বলে রংপুর চেম্বার আশংকা প্রকাশ করছে।

এ ছাড়া বিড়ির ওপর সাম্প্রতিক সময়ে মাত্রা অতিরিক্ত করারোপের ফলে বিড়ি শিল্পনগরী হিসেবে খ্যাত রংপুরের হারাগাছের কারখানাগুলো দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে কয়েক লক্ষাধিক বিড়ি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ছে, যা রংপুর অঞ্চলের অর্থনীতিতে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি করছে। তাই রংপুর চেম্বার তামাক নির্ভর রংপুর অঞ্চলের কয়েক লক্ষাধিক শ্রমিক ও চাষীদের কথা বিবেচনা করে ভারতের ন্যায় বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি সংশোধিত বাজেটে তামাক পণ্যের ওপর যৌক্তিক হারে করারোপের প্রস্তাব করছে রংপুর চেম্বার।



রাইজিংবিডি/রংপুর/১৩ জুন ২০১৯/নজরুল মৃধা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়