ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাঙামাটিতে বাণিজ্য মেলা হয় না ৬ বছর

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাঙামাটিতে বাণিজ্য মেলা হয় না ৬ বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : তিন পার্বত্য জেলার রাজধানী খ্যাত রাঙামাটি জেলায় দীর্ঘদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় না কোনো বড় মেলা।

রাঙামাটির পাশের উপজেলা রাউজান, রাঙ্গুনীয়ায় প্রতিবছর ঘটা করে বাণিজ্য মেলা, বিজয় মেলাসহ অন্যান্য মেলা হয়। কিন্তু রাঙামাটিতে ছয় বছর ধরে বাণিজ্য মেলা হয় না। আর ১৯৯৩ সালের পর অনুষ্ঠিত হয় না বিজয় মেলা।

ঢাকায় পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যেভাবে পার্বত্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইভাবে তিন পার্বত্য জেলায়ও পার্বত্য মেলা আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

২০০৩ সালে রাঙামাটিতে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এ ছাড়া বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে। রাঙামাটি শহরে আগে মেলার আয়োজনের ঐতিহ্য থাকলেও এখন তা অনেকটা অতীত। নব্বই দশকের শেষের দিকে রিজার্ভ বাজার মাঠে বিজয় মেলা ছিল এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মেলা।

পরবর্তীতে আরো অনেক মেলার আয়োজন থাকলেও বিজয় মেলার আবেদন কখনও পূরণ হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে এসে পার্বত্য জেলায় সবচে বড় মেলা ‘পার্বত্য বাণিজ্য মেলা’ আয়োজন করা হয়। যা এ যাবৎকাল পর্যন্ত সবচে বড় মেলা হিসেবে গণ্য করা হয়।

তবে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়নি। মেলাটি প্রতিবছর এক এক জেলা করে তিন পার্বত্য জেলায় হওয়ার কথা থাকলেও একবার করে আয়োজন করেই সেটিও শেষ হয়ে যায়। তবে ২০১০ সালের দিকে এসে পুনরায় বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়। তবে আয়োজকদের বিচক্ষণতার অভাবে মেলাটি যেভাবে আয়োজন হওয়ার কথা ছিল, তা তেমনটা হয়নি।

মেলা না থাকায় এলাকার কুটির শিল্পের পণ্য, কৃষি পণ্য প্রচার লাভ করছে না। নষ্ট হচ্ছে সৃষ্টিশীল মনমানসিকতার। সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে নির্মল আনন্দ থেকে।

এক সময়ের বিজয় মেলা ও বাণিজ্য মেলার আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য সুনীল কান্তি দে বলেন, মেলার মাধ্যমে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হয়। মেলা আয়োজন করা হয় সব শ্রেণির মানুষকে এক জায়গায় সমবেত করার উদ্দেশে। এর মাধ্যমে সৌহার্দ, সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন সেই অর্থে কোনো মেলার আয়োজন হয় না বললেই চলে। বিজয় মেলা কিংবা বাণিজ্য মেলাগুলোর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে মেলাগুলো যেমন একদিকে সম্প্রীতির মিলন কেন্দ্র হতো। অন্যদিকে পাহাড়ে তৈরিকৃত বিভিন্ন পণ্যও বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি হতো।

২০০৩ সালের বাণিজ্য মেলার আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য মো. মোস্তফা কামাল বলেন, কৃষ্টি, সংস্কৃতি বিকাশে মেলা একটি বড় মাধ্যম। মেলার মাধ্যমে এলাকার জনসাধারণের সৃষ্টিশীলতা প্রকাশ পায়। মেলার মাধ্যমে নির্মল আনন্দ লাভ করা যায়। বাণিজ্য মেলা কিংবা বিজয় মেলার মাধ্যমে এই এলাকার প্রস্তুতকৃত কুটির শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পের পণ্যগুলো বিক্রি সুযোগ হয়। এতে এই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটে। উদ্যোক্তা সৃষ্টিতেও মেলার ভূমিকা অনন্য।

তিনি এই ক্ষেত্রে পার্বত্য মন্ত্রণালয়, জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন ও চেম্বার অব কমার্সসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মো. সালাউদ্দীন বলেন, মেলা অনুষ্ঠিত হলে আমরা এই এলাকার তৈরিকৃত বিভিন্ন পণ্য বিক্রির সুযোগ পাই। মেলা কোনো একটি পণ্য পরিচয়ের প্রধান মাধ্যম। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেভাবে কোনো মেলা আয়োজন না থাকায় এই এলাকার পণ্য পরিচয়ের সুযোগ মিলছে না।

 

 

রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৮ জানুয়ারি ২০১৭/রেজাউল/রুহুল      

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়