ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

রাজধানীর ক্যাসিনো দুর্গে র‌্যাবের হানা

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৭, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজধানীর ক্যাসিনো দুর্গে র‌্যাবের হানা

রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবে নিষিদ্ধ জুয়া ক্যাসিনোর দুর্গে হানা দিয়েছে র‌্যাব। বুধরার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৪ টি ক্যাসিনোকে সিলগালা করে দেয়া হয়। এ সময় প্রায় ২ শতাধিক জুয়াড়িকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয় ভ্রাম‌্যমাণ আদালত।

র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, রাজধানীর অনেক স্থানে ক্যাসিনোকে কেন্দ্র করে মাদক সেবন বা বিক্রির নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। ব্যাপক তদন্ত শেষে ফকিরাপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবের ক্যাসিনোতে প্রথম অভিযান পরিচালনা করে ১৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবারের অভিযানে এ সময় জুয়া খেলার ২৪ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণে বিদেশি মদ-বিয়ার জব্দ করা হয়। বুধবার রাতেই র‌্যাবের অপর একটি দল গুলিস্থানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে ৪০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়ার সঙ্গে বিপুল পরিমাণ মাদক, নগদ অর্থ, কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ক্যাসিনো সামগ্রী জব্দ করা হয়।

অন্যদিকে একই রাতে বনানীর আহম্মেদ টাওয়ারে গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ নামক ক্যাসিনোতে অভিযান পরিচালনার পর ক্যাসিনোটি সিলগালা করা হয়। এর আগে মতিঝিলে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা, বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও ক্যাসিনো সরঞ্জামাদি জব্দসহ সিলগালা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

র‌্যাবের নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শুধু এগুলোই নয়, রাজধানীর আরো কয়েকটি ক্যাসিনো ক্লাব আছে, যেগুলো সিলগালা করা হবে। একদিনের অভিযানে পুরো ক্যাসিনো তছনছ হয়ে গেছে। আমরা ক্লাবগুলোতে নজর রাখছিলাম। পশ্চিমা ধাঁচের এ জুয়া খেলা আমাদের দেশে হওয়ার কথা নয়। তারপরও আবার ভেতরে চলছে রমরমা মাদকের বাণিজ্য। মতিঝিল ছাড়াও বনানী, গুলশান, উত্তরা ও বড় বড় হোটেলেও এই খেলা হচ্ছে। সেগুলোও বন্ধ করে দেয়া হবে।’

পুলিশ জানায়, ক্যাসিনোগুলোয় এতদিন ঘুঁটি ও তাসের মাধ্যমে জুয়া খেলা চললেও নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জুয়া অনেকটাই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। ক্লাবে জুয়া খেলা চলে মেশিনে। দুই ধরনের মেশিন রয়েছে। একটি হচ্ছে রোলেট, আরেকটির নাম স্পট। সিঙ্গাপুর, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে এসব মেশিন ব্যবহৃত হয়। চীন থেকে জুয়া খেলার এসব মেশিন আমদানি করা হচ্ছে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে। একেকটি মেশিনের দাম ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা। মেশিনে প্লাাস্টিকের চিপস ব্যবহার করে জুয়া খেলতে হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য আছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক ও র‌্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া, শাহ আলম মুরাদসহ ১৫ থেকে ২০ জন যুবলীগ নেতা নিয়ন্ত্রণ করেন ক্যাসিনো ব্যবসা। প্রতিদিন এসব ক্যাসিনোতে কোটি কোটি টাকার জুয়ার আসর হয়। এছাড়া চলে মাদকের বাণিজ্য। এসব থেকে আয়ের একটি বড় অংশই চলে যায় নেতাদের পকেটে। তারাই এক শ্রেণির প্রশাসনকে ম্যানেজ করে।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯/মাকসুদ/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়