ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাজস্ব বাড়াতে চালু হচ্ছে ‘স্বয়ংক্রিয় চালান’ পদ্ধতি

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪৪, ১৯ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজস্ব বাড়াতে চালু হচ্ছে ‘স্বয়ংক্রিয় চালান’ পদ্ধতি

কেএমএ হাসনাত : খুব শিগগির দেশের ৫৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ‘স্বয়ংক্রিয় চালান’ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে সরকার। চালানের মাধ্যমে সরকারের কোষাগারে অর্থ জমা দেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে এ ব্যবস্থা চালু করা হবে।

এবিষয়ে রোববার অর্থমন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় ‘ট্রেজারি চালান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ ধারণা বা ই-চালান হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রাপ্তি বাতায়ন। সরকারের রাজস্ব আহরণ ও হিসাবের সঙ্গতিসাধন, জনগণের হয়রানি লাঘব, আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা সর্বোপরি সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সরকারি প্রাপ্তি জমাদানের জন্য অর্থবিভাগের উদ্যোগে ‘ই চালান-সরকারের প্রাপ্তি বাতায়ন’ নামের এই অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফরমটি ২০১৮ সালের ২৫শে মার্চ থেকে চালু হয়েছে।

সরকারের কর ও বিভিন্ন সেবার ফি ব্যাংকে জমা প্রদানের বিদ্যমান পদ্ধতির পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সরকারি সকল প্রাপ্তি জমা দেওয়ার অনলাইন প্ল্যাটফরম হিসেবে এই পদ্ধতি বিবেচিত হবে এবং এটি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাতীয় পেমেন্ট গেটওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।

প্রাথমিকভাবে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ফি ও জাতীয় পরিচয়পত্র ফি জমাপ্রদানের সুবিধা সরকারের প্রাপ্তি বাতায়নে চালু করা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রাপ্তির জন্য অর্থজমাদানের সুবিধা পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে বলে এর আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সোনালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকও সরকারি চালান লেনদেন কার্যকর করা হবে বলে রোববার অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথমে সোনালী ব্যাংকসহ সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঢাকা মহানগরীর শাখাগুলোতে এ ব্যবস্থাটি চালু হবে। পর্ষায়ক্রমে সারা দেশে বাস্তবায়ন হবে। বর্তমান ব্যবস্থায় ভুয়া চালান ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার নজিরও রয়েছে। কিন্ত নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সরকারের বিপুল রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ হবে।

অর্থ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ট্রেজারি চালান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ ব্যবহার করে যে কোন বাণিজ্যিক ব্যাংকের যে কোন শাখায় ট্রেজারি চালানের অর্থ গ্রহণ করা যাবে।

যাদের  সরকারি ফি, কর এবং এমনকি জরিমানা জমা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে তারা সরকারের সবচেয়ে প্রাচীনতম পদ্ধতির মাধ্যমে বাণিজ্যক ব্যাংকগুলো সেবা প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নগদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে চালান রসিদ প্রদান করবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চেকের অর্থ গ্রহণের প্রমাণ হিসাবে স্লিপ প্রদান করে পরবর্তীতে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে চালান রসিদ প্রদান করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিস্টেম থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে দৈনিকভিত্তিতে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান অ্যাকাউন্ট ডেবিট করে ট্রেজারি চালান বাবদ জমাকৃত অর্থ সরকারি হিসেবে ক্রেডিট করবে এবং ক্রেডিট হিসেবে মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় বরাবর পাঠাবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সেবা প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া চালান রসিদ অনলাইন চালান ভেরিফিকেশন সাইটে যাচাই করে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করবে। এ ক্ষেত্রে চালান যাচাইয়ের সেবা দেওয়া সরকারি অফিসকে ব্যবহার চালান রসিদটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। যাতে রসিদটি আবার ব্যবহারের কোন সুযোগ না থাকে।

অনলাইন চালান ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হলে প্রয়োজনে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে হেল্পডেক্সে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করা যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ ব্যবস্থাটি সীমিত আকারে চালু হওয়ার পর গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকে যাচাইকৃত ১ কোটি ৪৮ লক্ষ ১৪ হাজার চালানের বিপরীতে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা জমা হয়েছিল।

সূত্র জানায়, এ ব্যবস্থাটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে সরকারের এসব খাত থেকে রাজস্ব আয় কয়েকগুন বাড়বে।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ আগস্ট ২০১৯/হাসনাত/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়