‘রোডে যাত্রী নাই, মাস্ক কিনতে টাকা লাগে’
শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুর। ঢাকার রায়েরবাগের কদমতলী থানা রোডের গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতে সবজি বিক্রি করছেন মুহাম্মদ জীবন আলী। তার সঙ্গে কথা এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘কাজ না করলে খাবো কী। ঘরে চাউল নেই জমানো টাকা নাই। যাদের টাকা আছে তারা ঘরে বসে থাকবে, আমি কেমনে ঘরে বসে থাকবো’।
করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা কেমন চলছে—জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে মাতুয়াইলে কথা হয় রিকশাচালক রহিমুদ্দিনের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘প্রতিদিনের কাজ ছাড়া পেটে ভাত জোটে না। সংসার চলে না। আমার একবেলা খাবারের টাকা ঘরে নেই। ভাড়া থাকি। চাল, ডাল কিনতে হয়। ছেলে-মেয়ে আছে। আমাদের তো এক টাকা দেওয়ার মতো কেউ নাই।’
এছাড়া রাজধানীর শনিরআখড়ায় মাতুয়াইল সাইনবোর্ড ঘুরে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকলেও অনেকেই কাজের সন্ধানে বেরিয়েছেন (খেটে খাওয়া মানুষ)।
কদমতলী থানার একটু সামনে কথা আলীমের সঙ্গে। তিনিও রিকশাচলক। তিনি বলেন, ‘কাজ না করলে পেট চলবো না। করোনার ভয়ে ঘরে বসে থাকলে বউ বাচ্চা না খেয়ে থাকবে। ঘরে বসে থাকার সময় নাই। মৃত্যুকে ভয় করার সময় নেই। ঘরের ভিতর থাকবে বড়লোকেরা তাদের টাকা পয়সা আছে তাদের মৃত্যুর ভয় আছে। আমার কপালে যা আছে তাই হবে।’
মুখে মাস্ক কেন ব্যবহান করছেন না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোডে যাত্রী নাই। এগুলো কিনতে টাকা লাগে।’
অপর এক রিকশাচালক শাজাহানুল ইসলাম বলেন, কাজ থেকে প্রতিদিন যায় তা দিয়ে সংসার চলে। করোনার ভয় করলে সংসার চলবেনা। জীবনযুদ্ধ করে বাঁচতে হবে।
এ বিয়য়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সামসুদ্দিন ভুইয়া সেন্টু বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের জন্য এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হতদরিদ্র রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শনিবার থেকে খাবার সামগ্রী বিতরণ শুরু হবে। কেউ খাবার সংকটে থাকলে আমাদের জানান। আমরা তার বাসায় খাবার পৌঁছে দেব।’
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন স্থানীয় কাউন্সিলর ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করেছে। আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি।
আসাদ/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন