ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

লঞ্চে স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছে মানুষ

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৯ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লঞ্চে স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে রাজধানীবাসী। জীবিকার প্রয়োজনে ইট-পাথরের শহরে আবাস গড়লেও রাজধানীবাসীর মন পড়ে থাকে নিজ গ্রামে।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বেশিরভাগ যাতায়াত লঞ্চযোগে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে ২২টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে আরো ২৫টি। নির্দিষ্ট পরিমাণ যাত্রী হলেই ছেড়ে যাচ্ছে এসব লঞ্চ। কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই অনেকটা স্বস্তিতেই বাড়ি যাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সদরঘাটে যাত্রীদের চাপ ছিল। যানজট ঠেলে সদরঘাট টার্মিনালে পৌঁছাতেই নাকাল যাত্রীরা। পুরান ঢাকার ইংলিশ রোড থেকে রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে টার্মিনাল পর্যন্ত ছিল যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ। তবে শুক্রবার সকালেও চিত্রটা ভিন্ন। খুব বেশি যানজট চোখে পড়েনি। তবে বিকেলে এ চাপ বাড়বে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।

সকাল সাড়ে ১০টা। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে লোকজন আসছেন। সেখানে থাকা লঞ্চগুলোতে বসে পড়ছেন যাত্রীরা। পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অপেক্ষা করছেন। আরো মানুষ অপেক্ষা করছেন টার্মিনালে। সন্ধ্যার পর ছাড়বে এসব লঞ্চ। কিন্তু অপেক্ষার শুরু সকাল থেকেই। এসব লঞ্চ ঈদের সময় ছাড়ার বিষয়ে কোনো নির্ধারিত সিডিউল নেই। লঞ্চ যাত্রী পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান লঞ্চ কর্মচারীরা। 

সুন্দরবন-১১ তে করে গ্রামের বাড়ি বরিশালে যাচ্ছেন ষাটোর্দ্ধ বয়সী খলিল উদ্দিন। থাকেন নারায়ণগঞ্জ। লঞ্চ ছাড়ার কথা বিকেল ৫টায়। সকাল ৯টার মধ্যেই চলে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘বিকেলে ভিড় বাড়তে পারে এ চিন্তায় সকালেই চলে এসেছি। আমি তো ৯টায় এসেছি, অনেকে সকাল ৭টায় এসে বসে আছে।’

বাবা মায়ের হাত ধরে লাফাতে লাফাতে লঞ্চে উঠছে কিশোর বয়সী মেহেদী ও সজল। ঈদে বাড়ি যাবার আনন্দ চোখেমুখে ঝলকানি দিচ্ছিল দুই ভাইয়ের। কাছে যেতেই মেহেদী বলে উঠলো, ‘এবার বাড়িতে অনেক মজা হবে। আব্বু-আম্মু অনেক কিছু কিনে দিয়েছে। দাদু বাড়ি যাবো, নানু বাড়িও যাবো। দাদু আমাদের জন্য গরু কিনেছে। গরু জবাই করা দেখবো।’
ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম-পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, ‘প্রতিবারের তুলনায় এবার বেশ কিছু বাড়তি কাজ করা হয়েছে, যা যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করবে।’ তিনি আশা করছেন, ভালোভাবেই ঈদের যাত্রা সম্পন্ন হবে।

তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে আমরা অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক ঘাটে থাকবে। এছাড়া সুপেয় পানি, মহিলাদের ব্রেস্ট ফিডিং রুম এবং প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ সদরঘাটে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিএনসিসি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল ও মেডিকেল টিমের সদস্যদের ঘাট এলাকায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ আগস্ট ২০১৯/মামুন খান/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়