ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

শাকিবের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ৩ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শাকিবের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি

ঢাকাই চলচ্চিত্রের মন্দার বাজারে হলবিমুখ দর্শকের একমাত্র ভরসা শাকিব খান। তার উপর ভরসা করে কোটি কোটি টাকা লগ্নি করে থাকেন প্রযোজকেরা। কিন্তু অভিযোগ আছে বিভিন্ন সময় এসব প্রযোজকদের বিপাকে ফেলেছেন শাকিব খান। এর মধ্যে শিডিউল ফাঁসানো ও শুটিং সেটে দেরি করে আসার অভিযোগ অহরহ শোনা যায়। এ নিয়ে চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোতে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা মিলেনি। এই তালিকায় রয়েছেন- ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমার প্রযোজক মনিরুজ্জামান। এবার তিনি আইনের আশ্রয় নিতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে রাইজিংবিডিকে জানান।

২০১৪ সালে ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিকে চুক্তি করে সাইনিংয়েই ১৫ লাখ টাকার চেক দেন শাকিব খানকে। কিছুদিন শুটিং করেই নানান টালবাহানা শুরু করেন বলে অভিযোগ করেন এই প্রযোজক।

মনিরুজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এক চেকে শাকিবকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছি। কিছুদিন কাজ করেই শাকিব শিডিউল নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এর পরে আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। অপু বিশ্বাসও বিষয়টি জানেন। সাদ্দামের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা দিলে শুটিংয়ে অংশ নেন শাকিব। এর পরে আবার টালবাহানা। অমিত হাসান, হিমেল ভাইয়ের মধ্যস্ততায় এফডিসির লাইটিং রুমে বসে আরো তিন লাখ টাকা দিয়ে রশিদ নিয়েছি। এর পরও শিডিউল দেয়নি। এটি ছিল অপু বিশ্বাস প্রেগনেন্ট হওয়ার আগের ঘটনা। এর মাঝে সে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে অন্য সিনেমায় কাজ করলেও আমাকে শিডিউল দেননি। শিডিউল চাইলে বলে দিচ্ছি, দিব। কিন্তু দেয়নি।’

এ বিষয়ে চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোতে কোনো অভিযোগ করেছেন? জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একাধিকবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনো ফল পাইনি। একমাত্র পরিচালক সমিতি আমাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন-আপনি আইনত ব্যবস্থা নিতে পারেন। আমরা সহযোগিতা করবো। শিল্পী সমিতিতে দুইবার গিয়েছিলাম। জায়েদ খান দেখিতেছি বলে আর পাত্তা দেয়নি। প্রযোজক সমিতিতে অভিযোগ করেছি। এখন আবার নির্বাচিত প্রযোজক সমিতিতে অভিযোগ করেছি। দেখি তারা কি করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এখন ক্ষতিপূরণ চাচ্ছি। এ সিনেমায় আমি প্রায় দুই কোটি টাকা খরচ করেছি। এই সিনেমায় ২৮ দিন শুটিং করে শেষ করতে পারেনি। অথচ ১৭ দিনে শাকিব খান অন্য সিনেমা শেষ করেছে। শাকিব অনেক কষ্ট দিয়েছে পুরো ইউনিটকে। বেলা চারটা-পাঁচটায় আমার শুটিংয়ে আসতো। আবার আটটা বাজলেই শুটিং প্যাকআপ করেছে। প্রযোজক সমিতি দেখি কি রেজাল্ট দেয়। এর উপর ভিত্তি করে আমি মামলায় যাব। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমাটি ২০১৪ সালে মহরতের মাধ্যমে শুটিং শুরু হয়েছিল। শাকিব-অপু জুটি ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিত হাসান, প্রবীর মিত্র, রেহানা জলি ও কাবিলা। এর কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক নিজেই।

শাকিব ও অপুর মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে গতবছরের ১২ মার্চ। এই দুই তারকার সর্ম্পক ভাঙনের ফলে তাদের নিয়ে নির্মিতব্য বেশ কয়েকটি সিনেমার প্রযোজক নিশ্চিত লোকসানের মুখে পড়েছেন। সিনেমাগুলোর প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষে শাকিব-অপুর মধ্যকার তিক্ত সম্পর্কের কারণে আটকে থাকে। এর মধ্যে ‘পাংকু জামাই’ সিনেমার কাজ অপু বিশ্বাস শেষ করে দিলে সিনেমাটি আলোর মুখ দেখে। এছাড়া অসমাপ্ত সিনেমাগুলো হচ্ছে, ‘লাভ ২০১৪’, ‘মা’, ‘ও মাই ডার্লিং’।

এদিকে শিডিউল জটিলতা নিয়ে অপু বিশ্বাস একাধিকবার বলে আসছেন অসমাপ্ত সিনেমার কাজ করতে তার কোনো আপত্তি নেই। ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমার শিডিউল যেকোনো সময় নিতে পারে। আর এটি ২০১৪ সালের সিনেমা। সেসময়ও কাজ করে দেয়া যেত। মাতৃত্বজনিত কারণে এর শুটিং বন্ধ ছিল না।

এ প্রসঙ্গে অপু রাইজিংবিডিকে জানান, ‘মাতৃত্বকালীন সময় পার করে দেশে এসে আমি ‘পাংকু জামাই’ সিনেমার কাজ শেষ করে দিয়েছি। এটার শিডিউল নিলে এটাও করে দেয়া যেত। এখনও শুটিং করতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি কোনো প্রযোজক ও পরিচালককে আমার ব্যক্তিগত কারণে ক্ষতির মুখে ফেলতে চাই না। তারা যখনই আমার শিডিউল চেয়েছে আমি দিয়েছি। নিজের পেশার প্রতি আমি সবসময়ই শ্রদ্ধাশীল।’


ঢাকা/রাহাত সাইফুল/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়