ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

শোকে কাতর রওশন

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ১৪ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শোকে কাতর রওশন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ স্ত্রী রওশন এরশাদ। মৃত্যুর পর থেকেই গুলশানের বাসায় নীরবে কেঁদেছেন। কোরান তেলাওয়াত করেছেন। নামাজ পড়ে দুই হাত তুলে স্বামীর জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। এখনো করছেন। দিন কাটছে তার এবাদতবন্দেগীতে।

রোববার দুপুরে সিএমএইচের মর্গে স্বামীকে শেষবারের মতো দেখে আসার পর থেকে বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন রওশন এরশাদ। সেই থেকে মুখে খাবারও দেননি তিনি। গুলশানের বাসায় চুপচাপ। ছেলে রাহগীর মাহি সাদ এরশাদ, পুত্রবধূ তাকে শান্ত্বনা দিচ্ছেন বারবার।

জানা গেছে, সিএমএইচ থেকে আসার পর জোহরের নামাজ আদায় করেন তিনি। তারপর থেকে তার হাতে তসবিহ। আল্লাহকে ডাকছেন। কোরান তেলাওয়াত করছেন। পড়ে আছেন জায়নামাজে। দুহাত তুলে দোয়া করছেন। দিন কাটছে তার এবাদতবন্দেগীতে।

দীর্ঘ সংসার জীবনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে সুখে-দুখে মিশে একাকার ছিলেন রওশন। সময়ে-অসময়ে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলেও কখনো এরশাদের সম্মানহানী হয় এমন কথা তার মুখ থেকে বের হয়নি। এমনকি এরশাদের জীবনে কতকিছুই ঘটেছে, তারপরও স্বামীকে ছেড়ে যাননি সহধর্মীনী রওশন। এখনো তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না এরশাদ আর নেই। তাকে ছাড়া বাকিটা পথ পাড়ি দিতে হবে।

রোববার সকাল পৌনে ৮টায় যখন এরশাদ মারা যান, তখন প্রথমেই খবর পান রওশন। ৮টা ১০মিনিটে খবর পেয়ে ছেলে সাদ এরশাদ ও পুত্রবধূকে নিয়ে ছুটে যান সিএমএইচে। অনেকক্ষণ নীরবে কাঁদেন। সাদকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রওশন। এ সময় ‍পুত্রবধূসহ অন্যরা তাকে শান্ত্বনা দেন। পরে স্বামীর মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া দরুদ পড়েন। চিকিৎসকদের কাছে পেয়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা অনেক কষ্ট করেছেন। উনি (এরশাদ) যদি কোনো ভুল করে থাকেন, আপনাদের কষ্ট দিয়ে থাকেন তাহলে আপনারা তাকে মাফ করে দেবেন। তারপর এরশাদের মরদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। মর্গে চলে যান রওশন। ময়নাতদন্ত শেষ হলে স্বামীকে শেষবারের মতো দেখে নেন। আর নীরবে কাঁদেন। পরে তারা চলে আসেন সিএমএইচের ওয়েটিংরুমে। সেখানে সাদ, পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে এরশাদের জন্য তিনি কোরান তেলাওয়াত করেন এবং দোয়া করেন। এ সময় তার সঙ্গে দেখা করেন জিএম কাদের। এরশাদের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী সামরিক কবরস্থানের কথা তুলে ধরলে জিএম কাদেরের কথায় সায় দেন রওশন। জাপার সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সিএমএইচ থেকে বেরিয়ে যাবার সময় দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর কাছে এরশাদের জন্য দোয়া চান রওশন এরশাদ। এ সময় তিনি বাকরুদ্ধ কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা ওনার জন্য দোয়া করবেন। তিনি সারা জীবন মানুষের জন্যই নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। দেশে এখন বন্যা চলছে, তিনি বেঁচে থাকলে ১৯৮৮ সালের মতো এবারও বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতেন। আজ তিনি নেই। আপনাদের দোয়াই আমাদের পাথেয়।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জুলাই ২০১৯/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়