ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী

একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৭, ৬ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী

বগুড়া প্রতিনিধি : দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল হত্যার অন্যতম অভিযুক্ত হাবিবুল হক মিন্টু জামিন পাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মামলার বাদী ও নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আসামি মিন্টুকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী উল্লেখ করে বলেন, ‘তার জামিন পাওয়ার ঘটনা আমাকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কারণ শাহজাদপুরের মিরু পরিবার সিরাজগঞ্জ থেকে পাবনা হয়ে বগুড়া পর্যন্ত নানাভাবে সংযুক্ত। যেহেতু আমি চাকরির কারণে আমার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বগুড়া শহরে অবস্থান করছি, সেই কারণে মিন্টু জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে আমি নিজে তো বটেই, তার চেয়ে বেশি আমার বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং রীতিমত অসহায় বোধ করছি।’

সাংবাদিক শিমুল হত্যায় গ্রেপ্তার মেয়র মিরুর ভাই হাবিবুল হক মিন্টু সোমবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

নুরুন্নাহার খাতুন বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে তাকে বগুড়া অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তার ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছেলে সাদিককে বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে এবং মেয়ে তামান্নাকে একই স্কুলে ১ম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিনা বেতনে তাদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নুরুন্নাহার তার স্বামী সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসামি হাবিবুল হক মিন্টুর জামিন বাতিল এবং মামলাটিকে দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তরের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উচ্চ আদালতের আদেশে জামিন পাওয়ার তথ্য উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে নুরুন্নাহার খাতুন বলেন, জামিন পেয়েই তিনি জেলগেটে তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন ‘চিন্তা করিস না। জামিনে ছাড়া পাইছি। ভয় নাই সবাই জামিন পাবে।’

নুরুন্নাহার খাতুন তার বক্তব্যে শিমুল হত্যা মামলার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আসামি পক্ষ শুরু থেকেই হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে নানামুখী অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক মাসেরও বেশি আগে মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আদালতে এখনো তা গৃহীত হয়নি। চার্জশিট গৃহীত হলেই প্রধান আসামি হালিমুল হক মিরু আর শাজহাদপুর পৌরসভার মেয়র হিসেবে থাকতে পারবেন না। অসুস্থতার অজুহাতে তাকে ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানে বসেই কলকাঠি নাড়াচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে নুরুন্নাহার খাতুন তার স্বামী শিমুল হত্যার পর তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি শিমুল হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার থাকার জন্য সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াসহ দেশের সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মেয়র মিরুর আরেক ভাই পিন্টু অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে হাত-পা ভেঙে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মেয়রের বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে শটগানের গুলিতে আহত হয়ে মারা যান সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল। পরে শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

 

 

রাইজিংবিডি/বগুড়া/৬ জুন ২০১৭/একে আজাদ/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়