ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

সবজি বিক্রেতা এখন এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার

শাহিদুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সবজি বিক্রেতা এখন এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার

ললিতা। বাইশ বছরের তরুণী। বসবাস কর্ণাটক রাজ্যের হিরিউর শহরে। বাবা এই শহরের নেহেরু মার্কেটের সামান্য সবজি বিক্রেতা। সমাজের একেবারে নিচু তলার মানুষ। এমন একটি পরিবারের মেয়ের কপালে লেখাপড়া তো দূরের কথা অল্প বয়সেই তাকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে।

কিন্তু ললিতা লাখে একজন। যে কারণে পুতুল খেলার সঙ্গী মেয়েগুলো যখন বিয়ে থা করে সংসারী হয়েছে, ললিতা তখন নিজের লড়াইটা একাই লড়ে গেছেন। এই লড়াইয়ে সঙ্গী শুধু কঠোর পরিশ্রম এবং সাধনা।

ললিতার দিন শুরু হয় কাক ডাকা ভোরে। বাবাকে বাজারে সবজি বিক্রিতে সাহায্য করাই তার কাজ। এর ফাঁকে চলে লেখাপড়া। এরপর কলেজ। ফিরে এসে মাকে ঘরের কাজে সাহায্য করেন তিনি। এভাবেই বছরের পর বছর লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন ললিতা। কলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেও রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর।

ভিসভেসভারাইয়া টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির (ভিইউটি) এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ললিতা এবার সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাস করেছেন। এছাড়াও গ্রাজুয়েট অ্যাপটিচিয়ুড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (জিএটিই) পরীক্ষাতেও তিনি রেকর্ড ৭০৭ নম্বর পেয়ে পাস করেছেন। এজন‌্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পাচ্ছেন  গোল্ড মেডেল। সুযোগ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার।

কিন্তু ললিতার ইচ্ছা ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (আইএসআরও)-তে কাজ করার। কারণ ললিতার আদর্শ ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান কে শিভান। যিনি ললিতার মতো কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন।

চলতি মাসের ১ তারিখ ললিতার পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। ফল প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই কৃতিত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে। তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী।

পশ্চিম বঙ্গের খ্যাতনামা কবি দেবব্রত সিংহ ‘তেজ’ কবিতায় সাঁঝলি নামে এক তরুণীর কথা বলেছেন। সাঁঝলির বাবা শিবু ছিলেন দিনমজুর। সেই দিনমজুরের মেয়ে সাঁঝলি মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভারতে প্রথম হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। ললিতা যেন বাস্তবের সাঁঝলি।


ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়