ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাতছড়ি উদ্যানে এখন উদ্ভিদ ও প্রাণীদের রাজত্ব

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১৬ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাতছড়ি উদ্যানে এখন  উদ্ভিদ ও প্রাণীদের রাজত্ব

করোনা পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান প্রাণীদের রাজ্যে পরিণত হয়েছে।পর্যটকের আনাগোনা বন্ধ থাকায় তাদের বিচরণ এখন স্বাধীন।

কোন বাধা নেই। ধাওয়া ধাওয়ি নেই। ঢিল ছোড়াছুড়ি নেই। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, সাতছড়ি উদ্যানের সকল প্রাণী এখন মনুষ্য উপদ্রবমুক্ত।

চিরহরিৎ এ উদ্যানটি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়। করোনা পরিস্থিতিতে পুরো উদ্যানই নীরব-নিস্তব্ধ।উদ্যানের সকালও গভীর রাতের মতো নিশ্চল। দু'চারটা দুষ্টু প্রাণীর ছোটাছুটিতে মাঝেমধ্যে নিরবতা ভাঙলেও তা তেমন উল্লেখ করার মতো নয়। অন্যদিকে মানুষের পদচারণা না থাকায় উদ্যানের লতাপাতা কিংবা নাম না জানা বুনো ফুলেরাও যেন স্বাধীন। তারা আপন মনে বেড়ে উঠছে, ফুটছে-ঝরছে, হাসছে খেলছে। লতাপাতায় বেষ্টিত হচ্ছে বন। বনে বিচরণ করছে নানা প্রজাতির প্রাণী। গড়ে উঠেছে তাদের নিরাপদ আবাসস্থল।
 


সাতছড়ির এ উদ্যানটির ইতিহাসে চোখ রাখলে চলে যেতে হবে ১৯১২ সালে। ওই বছর পাহাড়ি প্রায় ১০ হাজার একর দুর্গম পাহাড়ি জমি নিয়ে গঠিত রঘুনন্দন হিলস্ রিজার্ভই কালের পরিক্রমায় আজকের উদ্যান। অবশ্য জাতীয় উদ্যান হওয়ার ইতিহাস বেশিদিনের নয়। এ উদ্যানের ভেতরে রয়েছে অন্তত ২৪টি আদিবাসী পরিবারের বসবাস। রয়েছে বনবিভাগের লোকজন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন তারাও নিরব।

পর্যটকদের জন্য চালু করা প্রজাপতি বাগান, ওয়াচ টাওয়ার, হাঁটার ট্রেইল, খাবার হোটেল, রেস্ট হাউস, মসজিদ, রাত যাপনে স্টুডেন্ট ডরমিটরি- সবই এখন নিস্তব্ধ।
 


এখানে উদ্ভিদবৈচিত্র্যের মধ্যে রয়েছে দুইশতাধিক প্রজাতির গাছপালা। এর মধ্যে শাল, সেগুন, আগর, গর্জন, চাপালিশ, পাম, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, জাম, জামরুল, সিধাজারুল, আওয়াল, মালেকাস, আকাশমনি, বাঁশ, বেত-গাছ ইত্যাদি উল্লেখ্যযোগ্য।

জীববৈচিত্র্যের মধ্যে রয়েছে ১৯৭ প্রজাতির জীব-জন্তু। এর মধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর। আরো আছে প্রায় ২০০ প্রজাতির পাখি। রয়েছে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, শিয়াল, কুলু বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরিণের বিচরণ।
 


এছাড়া সরিসৃপের মধ্যে জাতের সাপ, পাখির মধ্যে কাও ধনেশ, বনমোরগ, লালমাথা ট্রগন, কাঠ ঠোকরা, ময়না, ভিমরাজ, শ্যামা, ঝুটিপাঙ্গা, শালিক, হলদে পাখি, টিয়া এসবেরও আবাসস্থল এই উদ্যান। গাছে গাছে অগণিত নান পোকামাকড় তো আছেই।

করোনা পরিস্থিতিতে সাতছড়ি উদ্যানে এখন যেন এসব বৈচিত্রময় উদ্ভিদ ও প্রাণীদেরই রাজত্ব।

সাতছড়ি বন্যপ্রাণী রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘করোনায় পর্যটক আসা বন্ধ রয়েছে। এ ফাঁকে নীরবতা পেয়ে প্রাণীর বিচরণ বেড়েছে।'

 

হবিগঞ্জ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়