ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাদাপাথরে মুগ্ধ পর্যটক

আব্দুল্লাহ আল নোমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৫, ১৩ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাদাপাথরে মুগ্ধ পর্যটক

আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিলেট : সীমান্তের ওপারে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি। সেখান থেকে নেমে এসেছে ধলাই নদী। স্বচ্ছ জলের এ নদীতে যেন সফেদ পাথরের বিছানা ঝলমল করে। সফেদ পাথরের বিছানায় জলকেলিতে মাতেন হাজারো পর্যটক। 

এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে ঈদের ছুটিতে পর্যটক ভিড় করছেন সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টে। বিভাগীয় শহর থেকে এর দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার। এলাকাটি স্থানীয়দের কাছে ‘সাদাপাথর’ নামে পরিচিত।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় ঈদুল আজহার ছুটিতে দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে সাদাপাথরে। এজন্য পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করা হয়েছে।

জৈন্তাপুরের দরবস্ত থেকে বন্ধুদের নিয়ে সাদাপাথরে বেড়াতে এসেছেন রাসেল সিরাজী। তিনি জানান, ঈদে তারা সাদাপাথর দেখার পরিকল্পনা করছিলেন। তাই বন্ধুদের নিয়ে মঙ্গলবার বেড়াতে এসেছেন। খুব উপভোগ করছেন।

সদর উপজেলার বাদাঘাটের কয়েস আহমদ কয়েকজন মিলে গেছেন সাদাপাথরে। তিনি বললেন, ‘ফেসবুকে সাদাপাথরের রূপ দেখে বন্ধুরা বায়না ধরেছিল সেখানে যেতে। ঈদের ছুটিতে তাই এখানে বেড়াতেও এসেছি।’

কয়েক দিন ধরে সিলেটে তীব্র গরম পড়েছে। মঙ্গলবার আকাশে মেঘের দেখা মিললেও বইছিল গরম হাওয়া। এ কারণে পর্যটকরা একটু প্রশান্তির খোঁজ পেতে ছুটেছিলেন জল-পাহাড় আর নদীর জাফলং, বিছানাকান্দি, পান্তুমাই, লালা খাল, মায়াবী ঝরণাসহ সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায়। 

পর্যটকের কমতি নেই ভোলাগঞ্জেও। পর্যটকরা নদীর হিমশীতল জলে নেমে প্রশান্তি পেয়েছেন। তারা এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

পর্যটকরা জানান, সত্যিই মনোরম এ সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো। পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে এটি দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, গত রমজানের ঈদের ছুটির পর এখানে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক এসেছিলেন। কোরবানির ঈদের ছুটিতেও পর্যটকরা এখানে বেড়াতে আসছেন। ঈদের দিনের ব্যস্ততা শেষে মঙ্গলবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক পর্যটক এখানে এসেছেন। 

তবে দর্শনার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর জন্য এখানে কোনো টয়লেট নেই। নেই খাবারের কোনো ব্যবস্থা। এজন্য পর্যটকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, সাদাপাথর এলাকায় দিন দিন বাড়ছে দর্শনার্থী। পর্যটকরাও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ। এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিনের। একই সঙ্গে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখার উদ্যোগও আশা করেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

ভোলাগঞ্জে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ও বিজিবি সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে জিরো পয়েন্টে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। ভ্রমণকে নিরাপদ করতে পর্যটন এলাকায় পুলিশি টহল রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, ঈদের ছুটিতে সাদাপাথরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। তাদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ-বিজিবির বিশেষ টিম নিয়োজিত আছে। পর্যটকদের কথা বিবেচনায় সেখানকার নৌকা ভাড়াও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এখানে পাবলিক টয়লেট, বসার জন্য গোলঘর ও রান্নার শেড নির্মাণ করা হচ্ছে।

 

রাইজিংবিডি/সিলেট/১৩ আগস্ট ২০১৯/আব্দুল্লাহ আল নোমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়