ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সার্চ কমিটি ও আমাদের প্রত্যাশা

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৯, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সার্চ কমিটি ও আমাদের প্রত্যাশা

একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন অনস্বীকার্য। আর সব রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজটিও যথেষ্ট কঠিন। নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। সংবিধান অনুযায়ী একটি আইনের অধীনে তিনি এই কমিশন গঠন করবেন। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার পর ৪৫ বছরেও এই আইন হয়নি। ফলে ইসি গঠন নিয়ে প্রতিবারই বিতর্কের অবতারণা হয়।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। কমিশন সচিব জানিয়েছেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান কমিশনের ধারাবাহিকতা থাকবে। এরপর নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এর আগেই নতুন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে হবে।

এ প্রেক্ষাপটে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগের রাষ্ট্রপতিও ইসি গঠনকল্পে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন।

এবার রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে যোগ্য প্রার্থীদের নাম বাছাই ও সুপারিশের জন্য ছয় সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছেন। আমরা আশা করছি এই সার্চ কমিটি তাদের দায়িত্ব পালনে সফল হবে এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে রয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এবং দুজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের শরিক দলগুলো এই সার্চ কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এই কমিটি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের মতে, প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তির পক্ষে সরকারের প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করা সম্ভব নয়।

রাষ্ট্রপতি যে সার্চ কমিটি গঠন করেছেন, সেই কমিটিকে তার কার্যপদ্ধতি ঠিক করে নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এখন সার্চ কমিটি প্রথম বৈঠক করার পর নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাঁচটি করে নাম চেয়েছে। রাষ্ট্রপতি যে ৩১ দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন সে দলগুলো তাদের পছন্দ অনুযায়ী পাঁচজনের নামের তালিকা দিতে পারবে। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই নামের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের অনুসন্ধানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একটি দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন যেমন প্রয়োজন, তেমনি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যোগ্য এবং দক্ষ নির্বাচন কমিশনেরও বিকল্প নেই। স্বাভাবিকভাবেই সবার নজর এখন সার্চ কমিটির দিকে। মাত্র ১০ কার্যদিবস সময় হাতে আছে তাদের।

স্বল্প সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করা নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ। আমাদের প্রত্যাশা, সার্চ কমিটি স্বচ্ছতা অনুসরণের মাধ্যমে সব বিতর্ক দূরে ঠেলে সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য কমিশন গঠনে তার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। নির্বাচন কমিশনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করবে, যে কমিশন আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কাজ করবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জানুয়ারি ২০১৬/আলী নওশের/টিআর/ এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়