ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সিসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা

আব্দুল্লাহ আল নোমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ২৬ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এসব বর্জ্য নিয়ে ফেলা হয় দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়ায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। প্রায় ১৫ একর আয়তনের এই গ্রাউন্ডের আধুনিকায়নে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মেডিকেল বর্জ্য ডাম্পিং করার জন্য অটোক্ল্যাপ প্রযুক্তির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

একই সঙ্গে অত্যাধুনিক উপায়ে গ্রাউন্ডেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্মাণ হচ্ছে ‘স্যানেটারি ল্যান্ডফিল’। এতে অর্থায়ন করেছেন বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে, ৬০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ডাম্পিং এলাকায় তরল বর্জ্যের কারণে পরিবেশ দূষণের মাত্রা অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

‘নতুন সিলেট’- গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গত বছরের আগস্টে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন আরিফ। এরপর থেকেই নির্বাচনের ইশতেহার অনুসারে নগরের উন্নয়নে কর্মতৎপরতা শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে সুরমার তীর দখলদার উচ্ছেদ, ছড়া-খাল দখলমুক্তকরণ, সড়ক প্রশস্থকরণ, হকার উচ্ছেদ, যানজট নিরসন, ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন পয়েন্টে ওয়াইফাই সুবিধা চালুসহ একাধিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন নগর গড়তে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ প্রকল্প হাতে নেন।

এ বিষয়ে মেয়র আরিফ বলেন, ‘‘সিলেট সিটি এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা বড় চ্যালেঞ্জ। বছরের পর বছর থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অবহেলিত ছিল। অথচ মহানগরীকে পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত রাখার জন্য সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা উচিত ছিল। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর ময়লা ও আবর্জনা ভোরের মধ্যে পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেয়ায় নগরবাসী কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে। কিন্তু এই বর্জ্য ডাম্পিংয়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় পরিবেশ বিপর্যয়ের হুমকি সবসময় বিরাজমান ছিল। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি যুগান্তকারী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্যে দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়ায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে স্যানেটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ শেষের পথে। ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তরল বর্জ্যের কারণে পরিবেশ দূষণের মাত্রা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।’’

ক্লিনিকেল ও মেডিকেল বর্জ্য স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এসব বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলে রাখলে তা মারাত্মক দূষণ ঘটায়। এই দুশ্চিন্তারও অবসান হতে চলেছে। প্রিজম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে এবং সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে ক্লিনিকেল ও মেডিকেল বর্জ্যকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডাম্পিং করার জন্য অটোক্ল্যাপ প্রযুক্তির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।’’

তিনি এও বলেন, বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে উন্নত বিশ্বের আদলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুটি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে এ সব কোম্পানি বিনিয়োগের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এই প্রকল্প চালু হলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব নেয়ার পর রোববার সিলেট সিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আয় এবং সমপরিপাণ টাকা ব্যয় ধরে ৭৮৯ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন তিনি।

প্রস্তাবিত এ বাজেটে আয়ের প্রধানতম খাত হিসেবে হোল্ডিং ট্যাক্স ৪৪ কোটি ০৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব খাতে সর্বমোট ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আগামীর সিলেট বিনির্মাণে এ বাজেট বাস্তবায়নে অতীতের মতো সকলের সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র আরিফ।


রাইজিংবিডি/সিলেট/২৬ আগস্ট ২০১৯/আব্দুল্লাহ আল নোমান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়