ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সেলেনার লুপাস রোগ, যা জানা উচিত

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সেলেনার লুপাস রোগ, যা জানা উচিত

সেলেনা গোমেজ

এস এম গল্প ইকবাল : পপ তারকা সেলেনা গোমেজ ২০১৫ সালে প্রকাশ করেন যে, তার মধ্যে দুরারোগ্য লুপাস রোগ ধরা পড়েছে, এটি একটি অটোইমিউন ব্যাধি যার জন্য তাকে কেমোথেরাপি নিতে হবে।

সম্প্রতি এই তারকা এ রোগ সম্পর্কে আবারো জানান। তিনি জানান যে, এ রোগের কারণে এই গ্রীষ্মে তার শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে। কিডনি দিয়ে তাকে সাহায্য করেছেন তার বন্ধু টিভি অভিনেত্রী ফ্র্যান্সিয়া রাইসা।

প্রচারের জন্য নতুন সংগীত থাকা সত্ত্বেও সেলেনা জনসাধারণের স্থানে নিজেকে অনুপস্থিত রাখেন। তিনি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে এ বিষয়ে উল্লেখ করে লিখেন, ‘লুপাস এবং তার থেকে আরোগ্যলাভের জন্য কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন ছিল।’

স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে এ সংগীতশিল্পী গতবছরও নিজেকে কাজ থেকে সরিয়ে রাখেন। ২০১৬ সালের আগস্টে তিনি বলেন যে, তিনি উদ্বেগ, প্যানিক অ্যাটাক বা আকস্মিক তীব্র ভয় এবং বিষণ্নতা বা হতোদ্যমে ভুগছেন। তার এসব উপসর্গ লুপাসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তিনি বলেন, আমি সক্রিয় হতে চাই এবং আমার স্বাস্থ্য ও সুখ রক্ষার দিকে নজর দিতে চাই। তাই সামনের সময়টা সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য কিছু সময় কাজ থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

লুপাস হচ্ছে, একটি দীর্ঘস্থায়ী অটোইমিউন রোগ। এটির প্রসঙ্গে গোমেজ বলেন, ‘এ রোগ মানুষের ওপর বিভিন্নভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।’ লুপাস ফাউন্ডেশন অব আমেরিকার মতে, ‘এ রোগ জয়েন্ট, ত্বক বা চর্ম, অভ্যন্তরীণ অঙ্গসহ শরীরের যেকোনো অংশের ক্ষতিসাধন করতে পারে এবং ইমিউন সিস্টেম বা প্রতিরোধ তন্ত্রকে বহিরাগত আক্রমণকারী ও সুস্থ টিস্যুর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণে ব্যর্থ করে।’ এর ফলে লুপাস অ্যান্টিবডি বা প্রোটিন সৃষ্টি করে যা সুস্থ টিস্যুকে হত্যা করতে পারে। এছাড়া সারা শরীরে প্রদাহ ও ব্যথা উদ্রেক করতে পারে এবং শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। অন্যভাবে বলা যায়, লুপাস ইমিউন সিস্টেমকে ওভারঅ্যাকটিভ করে তোলে বা প্রয়োজনাতিরিক্ত কার্যসাধনে প্রভাবিত করে।

এ রোগটি ছোঁয়াচে নয়। এটি পুরুষের তুলনায় মেয়েদের বেশি আক্রমণ করে। বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সে এটি বিকশিত হয়ে থাকে।

গোমেজের উপসর্গসমূহ ছাড়াও লুপাসের কারণে আরো অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। লুপাস রিসার্চ অ্যালায়্যান্সের সহযোগী সিইও এবং সহসভাপতি কেনেথ এম ফার্বার বলেন, ‘কখনো কখনো এ রোগটি সঠিকভাবে বুঝা যায় না।’ তিনি বলেন, ‘বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং প্যানিক অ্যাটাক লুপাসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, কিন্তু এ রোগ সাধারণত এসব উপসর্গের জন্য পরিচিত নয়।’

এ রোগ জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, জ্বর আসা, অবসাদ বা ক্লান্তি অনুভব করা, ফুসকুড়ি ওঠা, বুক ব্যথা করা, চুল পড়ে যাওয়া, রক্তাল্পতায় ভোগাসহ অন্যান্য আরো অনেক উপসর্গ নিয়ে আসে।

বর্তমানে লুপাসের কোনো প্রতিকার নেই, কিন্তু একগুচ্ছ ট্রিটমেন্ট অপশন বা চিকিৎসা পদ্ধতি আছে।

লুপাস ফাউন্ডেশন অব আমেরিকার মতে, ‘হালকা থেকে কড়া বিভিন্ন ওষুধের বৈচিত্র্যতায় এ রোগের চিকিৎসা করা হয়।’ প্রদাহ কমাতে, ইমিউন সিস্টেমকে দমন করতে, শারীরিক তীব্র অবনতি প্রতিরোধ করতে, উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং অঙ্গের ক্ষতি এড়াতে এসব ওষুধ ভূমিকা রাখে।

আরো অনেক তারকা লুপাসের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রামের কথা প্রকাশ করেন। সংগীত তারকা লেডি গাগা ২০১০ সালে সিএনএনের ল্যারি কিংকে বলেন যে, তিনি লুপাসের জন্য ‘বর্ডারলাইন পজিটিভ’ পরীক্ষা করেন। তিনি এ রোগের কোনো রকম উপসর্গে ভুগছেন না। তিনি উল্লেখ করেন যে, তার পরিবারে এ রোগ বিদ্যমান আছে।

আমেরিকান অভিনেতা নিক ক্যানন ২০১২ সালে প্রকাশ করেন যে, তার লুপাস আছে। এমনকি তিনি এ রোগের ব্যাপারে লুপাস ফাউন্ডেশন অব অ্যামেরিকার সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া, সংগীতশিল্পী টনি ব্র্যাক্সটন এবং সীলও লুপাসে ভুগছেন এবং তারা এ রোগের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রামের কথা বলেছেন।

তথ্যসূত্র : ইনসাইডার

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়