ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

স্বাধীনতার কবির প্রয়াণ দিবস আজ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১৭ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাধীনতার কবির প্রয়াণ দিবস আজ

শাহ মতিন টিপু: বাংলাদেশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছিল পঁচাত্তরের আগস্টে। শোকের মাস আগস্ট। এই শোকের মাসেই দেশ হারায় স্বাধীনতার কবিকে।

শোক জাগানিয়া মৃত্যুখচিত মাস যেন আগস্ট। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও এ মাসেই চলে যান। বিদায় নেন দেশের অন্যতম প্রধান কবি কবি শামসুর রাহমানও।

শামসুর রাহমান ছিলেন জনতার কবি। স্বাধীনতার কবি। দেশের ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কোন অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে, কোন অনাচার হতে দেখলে নিজেকে একাত্ম করে নিতেন এবং তার জবাব দিতেন কবিতার ভাষায়।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবির ত্রয়োদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট তিনি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যুর ৭ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ১৮ জানুয়ারি দুর্বৃত্ত দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন কবি। রাজধানীর শ্যামলীর বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। অবশ্য গুরুতর জখম হলেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

বরেণ্য কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শামসুর রাহমান স্মৃতিপরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

শামসুর রাহমানকে বলা হয় কবিতার বরপুত্র। আক্ষরিক অর্থে তিনি বাংলা সাহিত্যের নাগরিক-কবি। বাংলা কাব্যে সর্বসময় তিনি ছিলেন নাগরিকতার ধারক।

তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশের পরপরই তিনি সচেতন পাঠকমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার পরবর্তী গ্রন্থগুলো পাঠকদের ক্রমেই তার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। তার ‘আসাদের শার্ট’ কবিতা আজো ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানকে বিমূর্ত করে তোলে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে বেদনামথিত হয়ে লেখেন ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা’সহ বেশকিছু কবিতা।

স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর-পরবর্তী পট পরিবর্তনে আশাহত কবি সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে তার কলম চালিয়েছেন নিরন্তর। তার ষাটের অধিক কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়ও শিশুতোষ, অনুবাদ, ছোটগল্প, উপন্যাস, আত্মস্মৃতি, প্রবন্ধ-নিবন্ধের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, একুশের পদক, কলকাতা থেকে আনন্দ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।

কবি শামসুর রাহমান সাংবাদিক হিসেবে ১৯৫৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। তিনি অধুনা নামের একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

কবির জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরনো ঢাকার মাহুতটুলিতে। তিনি একাধারে কবি, সাংবাদিক, গীতিকার ও কলামিষ্ট। দীর্ঘ ছয় দশক কবি এ সব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবলীল ধারায় লেখালেখি করে বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ আগস্ট ২০১৯/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়