ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘স্যানেটারি টাওয়েল’-এর কাজ করে স্বাবলম্বী আট নারী

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘স্যানেটারি টাওয়েল’-এর কাজ করে স্বাবলম্বী আট নারী

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা: দেশের অনেক জেলার মতো হবিগঞ্জেও চলছে স্যানেটারি টাওয়েল প্রস্তুতকরণ ও বিতরণ কর্মসূচির কার্যক্রম।

কিশোরী স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতা সৃষ্টিতে এই কর্মসূচি চালু করেছে সরকার। এ কর্মসূচির আওতায় স্কুলে স্কুলে নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য ‘স্যানেটারি টাওয়েল’ তৈরির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে হবিগঞ্জে।

হবিগঞ্জ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে ‘স্যানেটারি টাওয়েল’ তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পাপিয়া সুলতানা, পলি আক্তার, কুহিনুর আক্তার, শাকিরা বেগমসহ হবিগঞ্জের আট নারী।

তারা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখছেন। বিনিময়ে তারা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। বিশেষ করে একাজে এসে তারা নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলেছেন। নতুন চলার পথ তৈরি হয়েছে তাদের। টাওয়েল-এর কাজ ঘুরিয়ে দিয়েছে তাদের জীবনের মোড়।

হবিগঞ্জ শহরের স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার একটি বাসার পরিচ্ছন্ন কক্ষে এ টাওয়েল তৈরি করা হচ্ছে।

স্কুলে নারী শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা টয়লেট থাকলেও সেখানে মাসিক ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই। তাই ৪০ শতাংশ ছাত্রীকে মাসে গড়ে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকতে হয়। উপস্থিতি না থাকায় লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে এদের । অনেক সময় আর্থিক অবস্থার কারণে স্যানেটারি টাওয়েল বা প্যাডের পরিবর্তে ময়লা কাপড় ব্যবহারের ফলে নারী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদেরকে বিনামূল্যে সরবরাহেই সরকারের এই টাওয়েল বিতরণ কর্মসূচী।

আলাপকালে তাদের একজন বলেন, ‘আমরা বেকার ছিলাম। এক সময়ে হবিগঞ্জ মহিলা অধিদপ্তরের এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। পরে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম স্যার আমাদেরকে নিয়ে এসে ‘স্যানেটারি টাওয়েল’ তৈরির কাজে নিয়োজিত করেছেন। এ কাজে যুক্ত হয়ে আমরা লাভবান। এখানে কার্যক্রম শেষ হলে  নিজ নিজ বাড়িতে কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে ‘স্যানেটারি টাওয়েল’ তৈরি করে বাজারজাত করার ইচ্ছা।

 

 

‘স্যানেটারি টাওয়েল’ কাজ সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের প্রশিক্ষক কামরুন্নাহার রোজি।

তারা এই প্রশিক্ষকেরও প্রশংসা করেন। জানান, রোজি আপা তাদেরকে একাজে সহায়তা করছেন। যার ফলে তারা কাজটি দ্রুত শিখতে পেরেছেন। এছাড়া মাঝে মাঝে এসে দেখে যান জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম স্যারও।

মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বেকার নারীদের কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী করাই আমাদের কাজ। প্রশিক্ষণ পেয়ে আজ বেকার নারীরা বাড়ি বাড়ি কর্মসংস্থান গড়ে তুলছে। যার ফলে মনে তৃপ্তি পাচ্ছি।’

তিনি জানান, আট নারীর হাতে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্যসম্মত স্যানেটারি টাওয়েল হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় পইল উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০ জন, ধুলিয়াখাল আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০ জন এবং চুনারুঘাট উপজেলায় সাটিয়াজুরি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০ জন ও শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০জনসহ মোট ৮০০ বয়ো:সন্ধিকাল কিশোরীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।

তিনি জানান, বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী এ পদক্ষেপকে সফল করতে হবিগঞ্জ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কাজ করছে। এ অফিসের মাধ্যমে বেকার নারীদের মাঝে মোবাইল সার্ভিসিং, বিউটিফিকেশন, আধুনিক দর্জি, কম্পিউটার এপ্লিকেশন, ব্লক বাটিকের উপর বছরে ৪০০জন ও আজমিরীগঞ্জ-নবীগঞ্জ উপজেলা অফিসে ২৪০ জন নারী প্রশিক্ষণ পাচ্ছে। প্রশিক্ষকরা নিয়মনীতি মেনে নারীদেরকে এ প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন।



রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১ সেপ্টেম্বর ২০১৯/মোঃ মামুন চৌধুরী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়