স্লোগান ধরলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী
৪৮ বছর পর ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে অবতরণ করল যুক্তরাজ্যের সেই রাজসিক বিমান। উত্তাল জনসমুদ্রও থাকলো প্রিয় নেতাকে বরণ করার। কিন্তু বিমান থেকে নামলেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান! তবে আলোকবর্তিতা হয়ে নতুন পথের দিশা দেখিয়ে দিলেন যেন।
১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে তার জন্ম শতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা ও লোগো উন্মোচনের অনুষ্ঠানে ছিল এমন আয়োজন; যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয় ১৯৭২ সালে মহান নেতা যেভাবে ফিরেছিলেন তার দেশের মাটিতে।
বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে যুক্তরাজ্যের যে বিমানটি ছিল, সেই বিমানের আদলে একটি প্রতীকী বিমান (c-130j) অবতরণ করে। এই সেই বিমানের প্রতিরূপ; যে বিমানে করে এই দিনে একই স্থানে দেশের মাটিতে পা ফেলেছিলেন জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমান।
আর প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানাতে আবেগাপ্লুত জনগণ অপেক্ষা করছিলেন। বিমানটি অবতরণ করার পর নির্ধারিত স্থানে এসে থামে। এরপর বিমানের দরজায় ফুটে ওঠে লেজার রশ্মির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আবহ। আলোকবর্তিকা দেখে উপস্থিত জনতা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা। এ সময় উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান।
আলোকরশ্মিটি ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে লাল গালিচার মাথায় এসে থেমে যায়। এ আলোকটিকে প্রতীকী অর্থে বঙ্গবন্ধুকে বোঝানো হয়েছে। লেজার লাইটে তার অবয়ব এগোতে থাকে আর লাল গালিচায় ফুল ছিটিয়ে মহান এই নেতাকে স্বাগত জানানো হয়। বঙ্গবন্ধুর রূপক আলোকবার্তিকা লালগালিচার শেষ করলে স্বশস্ত্রবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত বেজে ওঠে। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরাসহ অনুষ্ঠানে আসা সকলে।
পরে বঙ্গবন্ধু ফিরে আসার এই রেপ্লিকা দেখে নিজের মন ছুয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই আয়োজন দেখে তিনি চোখে অশ্রু আটকে রাখতে পারেননি।
বক্তব্যের শেষে এসে প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্লোগান দেন ‘জয় বাংলা’। এ সময় উপস্থিত জনতাও সমস্বরে বলেন ‘জয় বাংলা’। বেশ কয়েকবার ‘জয় বাংলা’ বলার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’। উপস্থিত জনতাও তার সঙ্গে স্লোগান মেলান ‘জয় বঙ্গবন্ধু’। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকা বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও স্লোগান দেন।
স্লোগানে স্লোগানে কিছু সময়ের জন্য যেন সবাই হারিয়ে যায় ৪৮ বছর আগে; যখন বঙ্গবন্ধু বিমান থেকে নামছেন, আর উত্তাল জনসমুদ্র থেকে ভেসে আসছে ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এ সময় তার পাশে শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয় ছিলেন।
এরপর বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখেন। তার পাশে শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয় উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য শেষে ল্যাপটপের মাধ্যমে সুইচ টিপে প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষের লোগোর উন্মোচন ও ক্ষণগণনা শুরু করেন। যখন ক্ষণগণনা উদ্বোধন করা হয়; তখন থেকে সময় বাকি ছিল ৬৬ দিন ৬ ঘণ্টা ৪১ মিনিট। এর মাধ্যমে সারাদেশে বসানো ঘড়িগুলোতে একসঙ্গে ক্ষণগণনা শুরু হলো।
ঢাকা/পারভেজ/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন