হবিগঞ্জে চার শিশু হত্যা মামলা ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় চারটি শিশুকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আদেশে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচার মো. আতাবুল্লাহ এ আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে আদেশ আসে মামলাটি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের।
মঙ্গলবার মামলার নির্ধারিত দিনে কারাগারে থাকা আসামি পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাঘাল, তার দুই ছেলে রুবেল মিয়া ও জুয়েল মিয়া, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আরজু মিয়া ও শাহেদ মিয়াকে আদালতে আনা হয়। তবে আদেশের কপিটি পর্যালোচনা করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আতাবুল্লাহ কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ না করে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আদেশের কপিটি পর্যালোচনা করে বিচারক মামলাটি সিলেটে পাঠান। আগামী কার্যদিবসে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১০) নিখোঁজ হয়।
পর দিন ওয়াহিদ মিয়া বাহুবল মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করা হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি সুন্দ্রাটিকি গ্রামের কাজল মিয়া নদীর পাশে মাটি কাটতে গিয়ে বালিচাপা অবস্থায় চার শিশুর লাশ দেখতে পান। পরে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাতে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আব্দুল আলী বাঘাল, তার দুই ছেলে জুয়েল ও রুবেল, একই গ্রামের আজিজুর রহমান আরজু, শাহেদ আলী, সালেহ এবং বশিরসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
৫ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকতাদির হোসেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আলমের আদালতে আটজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৮ জুন জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কিরণ শংকর হালদার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
এ মামলায় পলাতক তিন আসামি হলেন- আব্দুল আলী বাঘালের ভাতিজা অটোরিকশা চালক বিল্লাল হোসেন, উস্তার মিয়া ও বাবুল আহমেদ। মামলার অন্যতম আসামি অটোরিকশা চালক বাচ্চু র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
সালেহ ও বশির আহমেদের বিরুদ্ধে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অভিযোগপত্রে বলা হয়। তারা দুইজন জামিনও পেয়েছেন।
রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১৪ মার্চ ২০১৭/মো. মামুন চৌধুরী/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন