ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

১১৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ১৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১১৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা

১১৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপ-পরিচালক সামছুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী, তার ভাই দ‌্য ওয়েল টেক্স লিমিটেডের ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাজেদুল হক ওরফে শামীম চিশতী, ব্যাংকটির সাবেক এমডি এ কে এম এম শামীম, শাবাবা অ্যাপারেলসের মালিক মো. আবদুল ওয়াদুদ ওরফে কামরুল, এডিএম ডাইং অ্যান্ড ওয়াশিংয়ের মালিক রাশেদ আলী, তনুজ করপোরেশনের মালিক মো. মেফতাহ ফেরদৌস, মোহাম্মদ আলী ট্রান্সপোর্টের মালিক মো. গোলাম সারোয়ার ও ক্যানাম প্রোডাক্টসের মালিক ইসমাইল হাওলাদার।

তাদের বিরুদ্ধে ৮৮ কোটি ১৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হচ্ছে মামলায়। যা সুদসহ দাঁড়িয়েছে ১১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মাহবুবুল হক চিশতীর ভাই মাজেদুল হক চিশতী তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আবদুল ওয়াদুদকে মালিক সাজিয়ে শাবাবা অ্যাপারেলস নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। প্রতিষ্ঠানটি ফারমার্স ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ফান্ডেড ঋণ সুবিধা নেয়। এছাড়া, ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নন-ফান্ডেড ৩৯ কোটি ৯ লাখ ৬ হাজার টাকার ঋণসুবিধা দেয়া হয়, যা সুদাসলে ৪৫ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা হয়। এ বিষয়ে ব্যাংকটির সাবেক এমডি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

ব্যাংকের প্রভাবশালী পরিচালক মাহবুবুল হক চিশতী তার ভাইয়ের মাধ্যমে নিজেই সুবিধাভোগী ছিলেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়।

একইভাবে মাজেদুল হক চিশতী আরেক কর্মচারী রাশেদ আলীকে মালিক সাজিয়ে এডিএম ডাইং নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। এর মাধ্যমে ১৭ কোটি টাকা ঋণসুবিধার পরিবর্তে ৫৫ কোটি ৫ লাখ ১১ হাজার টাকা ঋণ নেন। এভাবে মোট ৮৮ কোটি ১৬ লাখ ১৭ হাজার টাকার ঋণ সুবিধা নিয়েছে অভিযুক্তরা।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মাহবুবুল হক চিশতী অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ভাইকে অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেছেন। এছাড়া, ব্যাংকটির এমডি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেছেন।

এর আগে জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং অর্থপাচারের অভিযোগে বাবুল চিশতী, তার স্ত্রী-ছেলেসহ ব্যাংকটির বিভিন্ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় চারটি মামলা করে দুদক।

সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য বেশি দেখানোসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকটি থেকে ঋণ দেয়ার অভিযোগে বাবুল চিশতীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় বাবুল চিশতীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে দুদক। আদালতে এ মামলাটির অভিযোগপত্র দিয়েছে কমিশন।

গত বছরের ৮ অগাস্ট দায়ের করা আরেকটি মামলায় বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে ফারমার্স ব্যাংকের অর্থে বিদেশ ভ্রমণ করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

এরপর একই বছরের ২৮ অক্টোবর একটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ২৯ কোটি টাকা ঋণ দেয়া এবং সেই অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয় বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে। এ মামলায় তার সাথে আরো পাঁচজনকে আসামি করে দুদক।


ঢাকা/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়