ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

৪ খুনে জীবনযাত্রা স্থবির, মাঠেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান

একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১১, ৯ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৪ খুনে জীবনযাত্রা স্থবির, মাঠেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার শিবগঞ্জে চার খুনের পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। কমেছে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। ভয়ে পাকা ধান কাটতে ক্ষেতেও যেতে পারছে না স্থানীয় কৃষকেরা। ফলে মাঠেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান।

এদিকে, চার খুনের দুই দিন পর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছে নিহতের পরিবার। পুলিশ এ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জন্য নারীসহ ছয়জনকে আটক করলেও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদঘাটন করতে পারেনি। এলাকাবাসীর দাবি, নিহতদের সকলেই মাদকের সাথে জড়িত। আর মাদক ব্যবসাই হত্যাকাণ্ডের কারণ হতে পারে।

সরেজমিনে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের ডাবইর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুই দিন আগেও গ্রামটি ছিল প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। ধান কাটা আর মাড়াইয়ে ব্যস্ত ছিল এখানকার কৃষক পরিবার। কিন্তু গত সোমবার একসাথে চার খুনের ঘটনার পর থমকে গেছে গ্রামবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। মাঠের পাকা ধান মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। তারপরও ভয়ে মাঠে কাজে বের হতে পারছে না এখানকার কৃষকেরা।

ওই এলাকার কৃষক সামাদ জানান, হাত্যাকাণ্ডের পর ধানের ক্ষেতে যেতে পারছেন না তিনি। পাকা ধান মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। হাটে-বাজারে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

গ্রামের আতাউর রহমান নামের আরেক ব্যক্তি জানান, আতঙ্কিত হয়ে  স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে তাদের ছেলে-মেয়েরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষক জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে স্কুলগুলোতে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার।

স্থানীয়রা জানান, মাদকের বিশাল আস্তানা এলাকা জুড়ে। আর নিহতরা সকলেই কম-বেশি মাদকের সাথে জড়িত। তাদের দাবি, মাদক ব্যবসার জেরই হত্যাকাণ্ডটি হতে পারে। দ্রুত হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকাবাসীর।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর মঙ্গলবার রাতে নিহত শাহরুল ইসলাম সাবুর বাবা আছির উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সর্বশেষ স্বামী-স্ত্রীসহ ছয়জনকে আটক করেছে বলে রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেন শিবগঞ্জ থানার সহকারী পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মশিউর রহমান। আটককৃতরা হলেন- উপজেলার কাথগাড়া গ্রামের আবু বক্করের ছেলে বেলাল হোসেন, তার স্ত্রী নাজনীন বেগম এবং তার মেয়ে নাতিশা খাতুন, আফছার আলীর ছেলে আবদুল হালিম প্রামাণিক, চন্দনপুর গ্রামের জসিমুদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও আটমূল ইউনিয়নের কুলুপাড়া গ্রামের ছেলে মোবাইল ব্যবসায়ী প্রফুল্ল সরকার লিটন সরকার। এ ছাড়া গোয়েন্দা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে ছয় সদস্যের একটি বিশেষ তদন্ত টিমও গঠন করা হয়েছে।

তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হননি।

মঙ্গলবার বিকেলে হত্যাকাণ্ডের স্থল পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি নিশারুল আরিফ (ক্রাইম ও অভিযান)।

উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার (৭ মে) সকালে উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের আলিয়ারহাটের উত্তরে ও গাঙ্গনই নদীর পশ্চিমে ডাবইর এলাকার একটি ধান ক্ষেতে চারজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানার পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।




রাইজিংবিডি/বগুড়া/৯ মে ২০১৮/এ কে আজাদ/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়