ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

৮ মাস পর মঞ্চে ‘আওরঙ্গজেব’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৮ মাস পর মঞ্চে ‘আওরঙ্গজেব’

নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোরের আলোচিত প্রযোজনা ‘আওরঙ্গজেব’। দীর্ঘ ৮ মাস পর মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে নাটকটি।

আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে। জাতীয় নাট্য উৎসবের অংশ হিসেবে প্রদর্শিত হচ্ছে এ নাটক। এটি রচনা করেছেন মোহিত চট্টোপাধ্যায়। নির্দেশনায় রয়েছেন অনন্ত হীরা।

নাটকের গল্প প্রসঙ্গে এ নির্দেশক জানান, ভারতবর্ষে মোগল রিয়াসতে ছিল তৈমুরলঙ্গ আর চেঙ্গিস খাঁর রক্ত। সেই তৈমুর বংশের প্রথা ছিল মসনদে প্রত্যেক শাহাজাদার সমান অধিকার। ছোট বড় বলে কোনো ভেদ নেই, যার তলোয়ার যত দীর্ঘ, যত ধারালো, যত সফল মসনদে তার তত অধিকার। যুগের পর যুগ এটাই চলেছে মোগল রিয়াসতে। সম্রাট হুমায়ুন তার ভাই কামরান, আশকরী, হিন্দালের বিরুদ্ধে লড়াই করে তখত দখল করেছিল। শাহেনশাহ আকবর পর্যন্ত মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল। বাদশা জাহাঙ্গীর নিজের পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন।

বাদশা শাহজাহান আপন ভাই খসরু, শাহরিয়ারের রক্তপাত ঘটিয়ে মসনদ দখল করেছিলেন। কিন্তু সেই শাহজাহানই শেষ বয়সে নিজ পুত্র আওরঙ্গজেব-এর হাতে বন্দি জীবন কাটান। শাহজাহান পুত্র আওরঙ্গজেব একজন ধর্মপ্রাণ সুন্নি মুসলমান হয়েও পিতাকে বন্দি করে মসনদ দখল করেন এবং মসনদের অন্য দাবিদার আপন ভাই দারা, মুরাদ আর সুজাকে একে একে হত্যা করেন। কিন্তু ক্ষমতা আর মসনদের লড়াই তো যুগে যুগে একই বৃত্তে ঘুরতে থাকে। সম্রাট শাহজাহানের মতো শেষ বয়সে সম্রাট আওরঙ্গজেব-এর পুত্ররাও বিদ্রোহী হয় এবং নিজ পুত্রদের হাতে বন্দি হয়ে আওরঙ্গজেব নিঃসঙ্গভাবে মেয়ে জিনাতসহ শেষ জীবন কাটান আহম্মদ নগরে। ঠিক যেমন তার পিতা তার হাতে বন্দি হয়ে কন্যা জাহানারাসহ শেষ জীবন কাটিয়েছিলেন দিল্লীর রাজপ্রাসাদে।

আওরঙ্গজেব-এর পুত্ররা বিদ্রোহী হলে সুলতান বন্দি অবস্থায় মারা যান, শাহাজাদা আকবর পারস্যে পালিয়ে গিয়ে মারা যান, মুহাম্মদ মুয়াজ বন্দি হন। অবশেষে তৃতীয় আর কনিষ্ঠ পুত্র আজম আর কামবক্স একজন অন্যজনকে হত্যা করে রাজ মসনদ দখল করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়। কিন্তু নব্বই বছর বয়সে আওরঙ্গজেব-এর উপলব্ধি হয়—‘পবিত্র কোরআন বুকে নিয়ে কেউ যদি হৃদয়হীন হয় তা হলে তার ক্ষমা নেই। কারণ আল্লাহ এবং পবিত্র কোরআন কাউকে জল্লাদ হতে বলেননি। আল্লাহ এবং পবিত্র কোরআন ভাইয়ের রক্তে জমিন রাঙিয়ে মসনদ দখল করতে শেখায়নি।’ যুগে যুগে দেশে দেশে মসনদ বা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার, ধর্মের নামে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা বা যেকোনো অমানবিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক তীব্র প্রতিবাদের নাম ‘আওরঙ্গজেব’।

নাটকটির বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ন করছেন—অনন্ত হীরা, নূনা আফরোজ, রামিজ রাজু, ইউসুফ পলাশ, শুভেচ্ছা, মাইনুল তাওহীদ, সরোয়ার সৈকত, তৌহিদ বিপ্লব, রিগ্যান সোহাগ, চৈতি/ঝুমুর, কাওসার, সুজয়, কিশোর, মুশফিক, লিটু, রাজা, শুভ, মনির, মেহেদী, সেলিম, নীরু, রাহুল।

মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনায় ফয়েজ জহির, পোশাক নূনা আফরোজ, সংগীত রামিজ রাজু, পোস্টার শাহীনুর রহমান, স্থিরচিত্র   রাফি, বেলাল, প্রপস-নূনা আফরোজ ও রামিজ রাজু, গেটআপ মানিক, মুখোশ নির্মাণ মাসিহুদ্দৌলাহ্ আজাদ, প্রচার ও প্রকাশনা সরোয়ার সৈকত, সংগীত প্রয়োগ সুজন, জুয়েল, আলোক সহকারী তৌফিক আজীম রবিন, রূপসজ্জা জনি সেন, মঞ্চ ব্যবস্থাপনা সীমান্ত আমীন।



ঢাকা/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়