পাপিয়া সাম্রাজ্য: হোটেল ওয়েস্টিনে দুদকের চিঠি
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার অঢেল সম্পদের হিসাব মিলাতে হোটেল ওয়েস্টিন ও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডোম-ইনো বরাবর চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ।
সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো আলাদা দুটি চিঠি প্রতিষ্ঠান দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে এ বিষয়ে কিছু নথিপত্র চাওয়া হয়েছে, যা আগামী ৮ মার্চের মধ্যে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চিঠির সূত্রে জানা যায়, হোটেল ওয়েস্টিন বরাবর পাঠানো চিঠিতে পাপিয়ার নিয়মিত হোটেলে থাকা ও খাওয়ার বিলের কপি, বিভিন্ন সময় হোটেল বুকিংয়ের নথিপত্র ও কার কার নামে রুম বুকিং করা হয়েছে, সেসব বিষয় সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ডোম-ইনোর এমডি বরাবর পাঠানো আরেক চিঠিতে পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসার বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে ইন্দিরা রোডের পাপিয়ার বাসাটি প্রকৃতপক্ষে ভাড়া নাকি পাপিয়ার অথবা তার স্বামীর নামে কেনা, সে বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল বিদেশে অর্থ পাচারসহ কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজকে নিয়োগ দেয়া হয়।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত জানান, ‘পাপিয়ার সম্পদ, সেসবের উৎস, ক্ষমতা, বিদেশে অর্থ পাচার সবই অনুসন্ধানের আওতায় আছে। পাপিয়ার আশেপাশে যারা ছিল, তাদের দিকেও গোয়েন্দা নজর রাখা হচ্ছে। তার সহযোগীরাও আইনের আওতায় আসবে। ’
শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা ও বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ পাচার এবং কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক এ অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
পাপিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক তিনটি মামলা করে র্যাব। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র আইনে একটি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়া ওরফে পিউসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বাকিরা হলো, পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন, সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা।
এরপর রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে ও নরসিংদীতে বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ তাদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদের সন্ধান পায় র্যাব। র্যাবের অভিযানে ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডে এই দম্পতির বাসা থেকে পিস্তল, গুলি ও গুলির ম্যাগাজিন, বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা/ এম এ রহমান/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম