গণগ্রেপ্তার, মামলা ও মিথ্যাচার চলছে: জামায়াত
দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার, মামলা ও মিথ্যাচার চলছে, এ অভিযোগ করে এগুলো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতি তিনি বলেছেন, ‘সরকার সারাদেশে গণগ্রেপ্তার চালিয়ে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীগণ হুমকি দিচ্ছেন যে, এবার কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি সৃষ্টি করে এবং কারাগারে আটক রেখে গণহত্যার দায় এড়ানো যাবে না। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালিয়ে এখন আবোলতাবোল কথা বলছে।’
এটিএম মা’ছুম বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ জানে, গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও সেতুমন্ত্রীর বক্তব্য ‘সাধারণ ছাত্রদের মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট’ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ‘আরেকবার যুদ্ধ করব’ মর্মে ঘোষণা দেওয়ার পরই দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গণহত্যা শুরু করে। মাত্র দুই থেকে তিন দিনেই শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বহু মানুষকে গুম করা হয়েছে। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। শিল্পী, অভিনেতা, সুরকার, কলামিস্ট, লেখক, বুদ্ধিজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ গণহত্যার বিরুদ্ধে। সরকার চিরুনি অভিযানের নামে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করে কারাগার ভর্তি করেছে। কিন্তু, জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।
তিনি বলেন, সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে পাঠাচ্ছে এবং আইনি সহায়তার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। ২৪ জুলাই ঢাকা বারের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন ও ঢাকা বারের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট আজমত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার আইনজীবীদের গ্রেপ্তার করে বিচারপ্রার্থীদের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আমরা সরকারের এসব অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে অ্যাডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন ও আজমত হোসেনের মুক্তি দাবি করছি।
মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কগণ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা তাদের ওপর নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সরকার তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনের নামে গণহত্যা চালিয়ে এখন সমন্বয়কারীদের নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। ভয়-ভীতি দেখিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। আলাপ-আলোচনা করে তাদের সকল যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে গণগ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার যে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, তা অহমিকা ও হঠকারিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকারকে বলতে চাই, দেশটা আপনাদের একার নয়। এ দেশের জনগণ আপনাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। আপনারা রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছেন। এর পরিণতি আপনাদের জন্য বুমেরাং হবে। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বলছি, আপনারা জনগণকে হয়রানি করবেন না। প্রজাতন্ত্রের সেবক হিসেবে পেশাদারিত্বের সাথে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করুন।
নঈমুদ্দীন/রফিক
