ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১২ ১৪৩১

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

গাঁজা সেবনের অভিযোগে হল থেকে ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

সিকৃবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৬:৩৯, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
গাঁজা সেবনের অভিযোগে হল থেকে ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) গাঁজা সেবনের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ পরান হলের ১০২নং কক্ষ থেকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের মধ্যে একজনকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে পারলেও বাকি দুজন সটকে পড়েন।

অভিযুক্তরা হলেন, হর্টিকালচার বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি অর্থনীতি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জনি সরকার এবং কৃষি অর্থনীতি অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তন্ময়। এদের মধ্যে জনি সরকার নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সিকৃবি শাখার উপ-স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক।

হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ওই কক্ষে প্রায়ই গাঁজার আসার বসে। ক্যাম্পাসের গাঁজা সেবনকারী চক্র এখানে নিয়মিত যাতায়াত করে‌‌। এর আগেও হল প্রাধ্যক্ষ স্যারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। স্যার তাদের সতর্কও করেছিলেন। এছাড়াও কক্ষে মাদক সেবন করতে নিষেধ করায় অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক তার রুমমেটকে মারার হুমকি দিতেন।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, “কিছুদিন ধরে আমরা জানতে পেরেছি, এ কক্ষে গাঁজা সেবন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রাধ্যক্ষ স্যারকে আগেও অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেননি। বুধবার রাতেও ওই কক্ষে গাঁজা সেবন হচ্ছে বলে আমরা খবর পাই। পরে আমরা গাঁজাসহ আব্দুর রাজ্জাক, জনি সরকার ও তন্ময়কে পাকড়াও করি।” বুধবার বিকেলে হল প্রাধ্যক্ষ তাদের সতর্ক করলেও তারা তা উপেক্ষা করে রাতে আসর বসিয়েছেন বলে জানান রাসেল।

ওই কক্ষের আবাসিক ছাত্র পারভেজ বলেন, কক্ষে গাঁজা সেবনে আমার সমস্যা হয়। এছাড়া কক্ষে গাঁজা সেবন করতে বারণ করলে আজ সে (আব্দুর রাজ্জাক) আমাকে হল ছেড়ে চলে যেতে বলে। এছাড়া আমাকে তিন বার মারার হুমকিও দেয়।

এদিকে, শাহপরান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আজিজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ, ডিন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ কাওসার হোসেন ও কৃষি অর্থনীতি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুদ আলমের উপস্থিততে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে হর্টিকালচার বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক মাদক সেবনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শাহপরান হলের প্রাধ্যক্ষ। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হলের ১৫ জন গাঁজাসেবীর তথ্য দেন।

ওই ১৫ জন মাদক সেবী হলেন, কৃষি প্রযুক্তি অনুষদের ফারহান রাকিব, কৃষি অনুষদের শাহরিয়ার মিশন, জাওয়াদ রাকিব, অলিক, নসীম, মাৎসবিজ্ঞান অনুষদের আমির, তনয়, অনিক, কৃষি প্রযুক্তি অনুষদের রাব্বি, সোহেল, নাইম রাইয়ান রিভি, সাদি, ফিরোজ ও সৌরভ। এই ১৫ জনের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

হযরত শাহপরান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, “মাদক বহন ও সেবনের  বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা তিনজনকে (আব্দুর রাজ্জাক, তন্ময়, জনি সরকার) আপাতত হল থেকে বহিষ্কার করবো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যে ১৫ জনের নাম বলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/আইনুল/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়