ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ১৯ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন ঝাঁজ টের পেল রাজশাহী

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৮:২৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
চ্যাম্পিয়ন ঝাঁজ টের পেল রাজশাহী

১২ বলে ৪ রানের দরকার ছিল ফরচুন বরিশালের। মৃত্যুঞ্জয়ের ফুলটস বল মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে শের-ই-বাংলার গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের ছাদে ফেললেন ফাহিম আশরাফ। বল আর ফিরে এলো না। তাতে সমস্যাও হলো না। ওই ছক্কাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বরিশালের। জয় দিয়ে বিপিএল শুরু ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের।

আফসোসটা ইয়াসির আলী রাব্বী করবেন নাকি দুর্বার রাজশাহী করবে সেটাই বিরাট প্রশ্নের। দুজনেরই আফসোস হতে পারে। চেষ্টার কমতি ছিল না কারোরই। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন ঝাঁজ এমনই যেটা নিতে পারল না কেউই। ইয়াসিরের ৯৭ রানের ঝকঝকে ইনিংসে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ১৯৭ রানের বিশাল পুঁজি পায় রাজশাহী। ওই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বরিশালের অর্ধেক ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন যখন স্কোরবোর্ডে রান মাত্র ৬১। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নেয় বরিশাল। সেটাও ১১ বল আগে, ৪ উইকেট হাতে রেখে।

আরো পড়ুন:

যে জয়ের রূপকার ফাহিম আশরাফ। ২১ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে জয়ের সমীকরণ অতি সহজে মিলিয়ে দেন পাকিস্তানের পেস অলরাউন্ডার। যেখানে মাটি কামড়ে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন কেবল একবার। হাওয়ায় ভাসিয়ে সাতবার। ২৫৭.১৪ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসটি স্রেফ উত্তাপ ছড়িয়ে দেয় পুরো স্টেডিয়ামে।

জয়ে বিরাট অবদান রাখেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ১৭ বলে ২৭ রানের ইনিংসটি ছিল মুগ্ধতা ছড়ানো। আর অভিজ্ঞতার সবটুকু দিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৬ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৬ রান করেন তিনি। দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে অসামান্য ইনিংসে দলকে বিপদে পড়তে দেননি মাহমুদউল্লাহ।

এর আগে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামান ইয়াসির। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে রাজশাহী বড় পুঁজি পায় তার ৯৪ রানের ইনিংস। ৪৭ বলে ইনিংসটি সাজান ৭ চার ও ৮ ছক্কায়। দুইশ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসটি সেঞ্চুরিতে রূপ নিলে নিশ্চিতভাবেই পূর্ণতা পেত।

তবে যতটুকু হয়েছে সেটাও কম কিসের। ইয়াসিরের সঙ্গে দ্যুতি ছড়িয়েছেন রাজশাহীর ওপেনার এনামুল হক। ৫১ বলে ৬৫ রান করেছেন ৪ চার ও ৫টি ছক্কায়। দুজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪০ রান জমা করেন। এর আগে ইনিংসের শুরুতে কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন জিসান আলম। ভালো শুরুর পর ইনিংস বড় করতে পারেননি মোহাম্মদ হারিস (১৩)। সেখান থেকে হাল ধরেন ইয়াসির ও এনামুল। দুজনের জমাট জুটিতে এগিয়ে যায় রাজশাহীর রান। ফাহিম আশরাফকে দারুণ স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মেরে ৪২ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান এনামুল হক। রিপন মণ্ডলকে চার মেরে ইয়াসির ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৫ বলে।

তখনও বোঝা যাচ্ছিল ইয়াসিরের সেঞ্চুরির সুযোগ তৈরি হতে পারে। ঝড় তুলে পরের ১২ বলে ৪৬ রান করেন। যেখানে পেসার রিপন মণ্ডলের উপর রীতিমত ঝড় তোলেন এ ব্যাটসম্যান। তার দুই ওভারে ৩টি করে চার ও ছক্কা মারেন। শেষ দিকে রায়ান বার্ল ৮ বলে ৯ রান করলেও দলের দাবি মেটাতে পারেননি। সেখানে ইয়াসির স্ট্রাইক পেলে সেঞ্চুরিটা হয়তো হয়েই যেতো।

বোলিংয়ে অভিষেক রাঙানো হয়নি পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদির। ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। এছাড়া রিপন মণ্ডল ৪ ওভারে দিয়েছেন ৫৫ রান। ভালো করেননি তানভীর ইসলামও। ৪৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। কাইল মায়ার্স ৩ ওভারে ১৩ রান দিয়ে পেয়েছেন ২ উইকেট।

ব্যাটিংয়ে বরিশালের লাইনআপ বেশ বড়। কিন্তু টপ ও মিডল অর্ডারে কেউই হাল ধরতে পারেননি। রানের খাতা খোলার আগে শান্ত আউট হন। তামিমের ইনিংস থেমে যায় ৭ রানে। তাওহীদ হৃদয় ভালো শুরুর পর ৩২ রানে আউট। মায়ার্স ৬ ও মুশফিক ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপরই শুরু হয় বরিশালের লড়াই। যে লড়াইয়ের ঝাঁজ টের পায় বিপিএলের ফেরা রাজশাহী।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়