ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

নীল সবুজ জলের ক্যাপ্রি দ্বীপ (পর্ব-১)

ইসমাইল হোসেন স্বপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নীল সবুজ জলের ক্যাপ্রি দ্বীপ (পর্ব-১)

ইতালির উপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ ক্যাপ্রি। ক্যাপ্রি দ্বীপে যত দূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর নীলের বিস্তীর্ণ জলরাশি।

সমুদ্রের বুকে ফারাগ্লিওনি নামের বিশাল বিশাল পাথর উঁচু হয়ে এক মনোরম দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। দূর থেকে মনে হয় যেন সমুদ্রে পাথর ভাসছে। এই দ্বীপে রয়েছে ছোট বড় অনেক পাহাড়। এ যেন পাহাড় আর সমুদ্রের গভীর মিলনমেলা।

সেই অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকপ্রেমীরা ছুটে আসেন ইতালির নাপোলি শহরের দক্ষিণে অবস্থিত এই ক্যাপ্রি দ্বীপে।

নেপলস, সোরেন্টো, পোসিতানো এবং আমালফি থেকে ফেরি দিয়ে অথবা নেপলস উপসাগর এবং সোরেন্টাইন উপদ্বীপের বন্দরগুলি থেকে নৌকা দিয়ে ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ক্যাপ্রি যাওয়া যায়।

পাহাড় ও সমুদ্রের গভীর মিলনমেলা, সমুদ্রের বুকে ভেসে থাকা বিশাল বিশাল পাথর, প্রাচুর্যময় পরিবেশ আর হালকা জলবায়ুর অসাধারণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে নতুন বছরের শুরুতেই গিয়েছিলাম ক্যাপ্রি দ্বীপে।

সমুদ্র পথে নেপলস থেকে ক্যাপ্রির দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। ভোর সকালে নেপলস থেকে ক্যাপ্রির উদ্দেশ্যে ফেরিতে চড়ে বসলাম।

টাইরহেনিয়ান সমুদ্রের নীল জলে সূর্যোদয়ের লাল আবীর আছড়ে পড়ার দৃশ্যে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। জানুয়ারির এই সময়ে সমুদ্রের বাতাসে এখানে বেশ শিরশিরে ঠান্ডা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গরম বাড়ে।

টাইরহেনিয়ান সমুদ্রে ঘণ্টাখানের যাত্রা দিয়ে ফেরি থেকে নেমে ক্যাপ্রি শহরে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। টুরিস্ট অফিস এখনো খোলা হয়নি। অপেক্ষা করতে লাগলাম টুরিস্ট অফিসের জন‌্য।  প্রায় ৪০ মিনিট পর টুরিস্ট অফিস খুললো। অফিস থেকে ম্যাপ কিনে এবার ক্যাপ্রি দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।

ক্যাপ্রি দ্বীপে যাতায়াতের সুবিধার্তে ১৫ মিনিট পরপর হলুদ রঙের বাস ছাড়ে। সারা দিনের পাস কেটে নিলাম। সারা দিনের পাস কেটে নিলে একটা সুবিধা হলো যেখানে খুশি যেকোনো বাসে নামাও যাবে উঠাও যাবে।

প্রথমেই পৌঁছালাম ব্লু গ্রোটো এলাকায়। ক্যাপ্রির সবচেয়ে সর্বাধিক পরিচিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় স্থানের মধ্যে একটি হলো ব্লু গ্রোটো। একটি অন্ধকার গুহা যেখানে সমুদ্রটি বৈদ্যুতিক নীলকে আলোকিত করে।

এই গুহার বিশেষ আকর্ষণ হলো গুহার মুখ বন্ধ ও খুলে সমুদ্রে জোয়ার ভাটায়। এই গুহায় ছোট্ট নৌকো করে ঢোকার জন্যে প্রচুর ভিড়, চিৎকার। যারা ভেতরে ঢুকেছে, তাদের চিৎকার সমুদ্রের কিনারে এই জায়গাটাকে বেশ সরগরম করেছে। ঢোকার মুখে এই গুহা অন্ধকার কিন্তু একটু ভেতরে গেলেই দেখা যায় অদ্ভুত আলো। সমুদ্রের বুকে সূর্যের আলো পড়ে গুহার ভেতরে এক আশ্চর্য সুন্দর  আলোর খেলা তৈরি হয়।

গুহার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করে গুহা থেকে বের হয়ে কিছুটা সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে হেঁটে আশেপাশে ঘুরে নিলাম। এই ছোট্ট সুন্দর দ্বীপে প্রকৃতি যেন নিজেকে মেলে ধরেছে। এ যেন পাহাড় আর সমুদ্রের কবির মিতালি। পাহাড়ি এই দ্বীপে নানান ছোট ছোট পাকদণ্ডী চলে গেছে।

চলবে...

 

ইতালি/স্বপন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়