ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

প্যারিসে নির্মিত হলো প্রথম স্থায়ী শহিদ মিনার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ১৩ অক্টোবর ২০২৩  
প্যারিসে নির্মিত হলো প্রথম স্থায়ী শহিদ মিনার

ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতির তীর্থভূমি ফ্রান্সের প্যারিসে নির্মিত হয়েছে প্রথম স্থায়ী শহিদ মিনার। 

গত রোববার (৮ অক্টোবর) প্যারিসের বিখ্যাত সেন ডেনিস ইউনিভার্সিটির বার্নার্ড মারি স্কয়ারে নির্মিত এ শহিদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন সেন্ট ডেনিসের মেয়র মাতিউ হ্যানোতা, স্থপতি ফেডেরিক ক্যাফ, অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন আয়েবার মহাসচিব ও শহিদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা কাজী এনায়েত উল্লাহ এবং সিকানো বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সরুফ সদিওল। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এসময় দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি, ডেপুটি মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ফ্রান্সে অবস্থানরত বাংলাদেশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত আয়েবার নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন আয়েবা’র প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ড. জয়নুল আবেদীন ও ডিবিসির সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম। 

বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্যারিসে স্থায়ী শহিদ মিনার তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য শুরুতে ফোনালাপের মাধ্যমে মেয়র মাতিও ওতি’র প্রতি অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি একটি লিখিত বাণী দেন, যেটি ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করে পাঠ করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মাতিউ হ্যানোতা ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাঙালি একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। ভাষা শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এমন একটা স্মৃতিস্তম্ভ তার এলাকায় করতে পেরে তিনি গৌরবান্বিত হয়েছেন বলে জানান। 

মেয়র অফিসের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হবে বলেও তিনি জানান। 

অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন আয়েবার প্রেসিডেন্ট বলেন, এমন উদ্যোগ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে।

আয়েবার সেক্রেটারি জেনারেল কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্যারিসে স্থায়ী শহিদ মিনার উদ্বোধন এক ঐতিহাসিক ঘটনা, যা ২১ ফেব্রুয়ারির ইতিহাস এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে ফ্রান্সের মানুষের কাছে ও বাংলা ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেবে। 

ভাষা শহিদদের স্মরণে নির্মিত শহিদ মিনারটি বাংলা ভাষাভাষীদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

প্যারিসের মাটিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের নকশা অনুযায়ী এ শহিদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতার জন্য তিনি আর্কিটেক্ট ও মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। 

তিনি বলেন, এই উদ্যোগ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মেলে ধরবে, যা বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অনন্য এক উচ্চতায়।

সিকানো বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সরুফ সদিওল মেয়র মাতিও ওতি, ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশি, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্যারিস সিটিতে এমন একটি স্থাপত্য নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শেষ হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বরলিপি শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক আমদাদুল হক স্বপন।

পারভেজ/ফয়সাল/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়