ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বড় হারে বাংলাদেশের বিদায়

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বড় হারে বাংলাদেশের বিদায়

বর্ণনায় আর কী লিখব! যখন স্কোরকার্ডে বাংলাদেশ ০, জাপান ৯। স্কোরলাইনই বলে দিচ্ছে কতোটা দাপটের সঙ্গে খেলেছে জাপানের কিশোরীরা। ৯০ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে কতশত আক্রমণ রোখার চেষ্টা করতে হয়েছে সেটা আঁখি-আনাই-নীলু-শামসুন্নাহাররা জানেন। সেইসব আক্রমণের অধিকাংশই রুখতে পেরেছে তারা। কিছু পারেনি। তাইতো দিনশেষে ব্যবধানটা স্পষ্ট হয়ে দেখা দিল। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিমত্তা, টেকনিক, ট্যাকটিস, স্টামিনা সবকিছুতেই পার্থক্য স্পষ্ট হয়েছে।

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পর আক্রমণ মানিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ব্যতিব্যস্ত কর রাখে। কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন ডাগ আউট থেকে চিৎকার করে করে নিদের্শনা দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছিল না। সাইড বেঞ্চে বসে টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলিও চিৎকার করে করে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে জাপানের কোচ ছিলেন নিবির্কার। কারণ, তার শিষ্যরা যে ছক মেনেই খেলছে। সেই ছকের ধারে-কাছে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। তাইতো প্রথমার্ধেই ৫টি গোল হজম করে মারিয়া-তহুরারা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারো গোল হজম করতে শুরু করে বাংলাদেশের মেয়েরা। এবার কোচ ছোটন হতাশ হয়ে ডাগ আউট থেকে সাইডবেঞ্চে চলে আসেন। ময়দানি লড়াইয়ে তার কোনো অস্ত্রই যে কাজে লাগছে না। পল স্মলিও আর মারিয়া-তহুরা-আঁখি বলে চিৎকার করছিলেন না। ‍দুই হাত দিয়ে গাল দুটো ধরে হাঁটুতে ভর দিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে বসেছিলেন। কী হচ্ছে মাঠে? একের পর এক গোল। ভালো একটি আক্রমণ হলেই গোল! রক্ষনভাগের খেলোয়াড়রা কিছুতেই কিছু করতে পারছিল না। শিষ্যরা যখন মাঠে নাস্তানাবুদ হয় তখন ডাগ-আউট কিংবা সাইডবেঞ্চে কোচরা কি শান্তিতে থাকতে পারেন? তাদের কি সস্তি মেলে?

দুই অর্ধ ৯টি গোল হজম করল ছোটন ও পলের শিষ্যরা। আর এই হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে সেমিফাইনালে যাওয়ার পথ একধাপ এগিয়ে গেল জাপান।

জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবধানটা তো আগেই স্পষ্ট ছিল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে জাপানের মেয়েরা রয়েছে ১১তম স্থানে। আর বাংলাদেশ ১৩৯। ২০১১ সালে জাপান নারী ফুটবল দল বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। আর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলে তাদের ২০০৫ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তিনবার শিরোপা জিতেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ টানা দ্বিতীয়বারের মতো খেললো মূলপর্বে।

বুধবার থাইল্যান্ডের চনবুরির ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্যাল এজুকেশন স্টেডিয়ামে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২ মিনিটে জাপানের মানাকা হায়াসি গোল করে এগিয়ে নেন দলকে। ৬ মিনিটে মাইকা হামানো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ১৭ মিনিটের মাথায় জাপানের অধিনায়ক ময়ি ওটা গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ৩-০ ব্যবধানে। ২৩ মিনিটের মাথায় হামানো তার জোড়া গোল পূর্ণ করেন। আর ৪৩ মিনিটে মোমোকো নেবু বাংলাদেশের জালে বল জড়ান। তাতে প্রথমার্ধেই ৫-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে গোলার রাব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। বিরতির পর পরই গোলের দেখা পায় জাপান। ৪৯ মিনিটে কায়িনো হিরানকা ব্যবধান ৬-০ করন। এ সময় কর্নার পায় জাপান। কর্নার থেকে মানাকা হায়াসির ক্রসে হেডে গোল করেন হিরানকা। ৫১ মিনিটে মোমোকো নেবু বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে বল জালে পাঠান। তাকে গোলে সহায়তা করেন অধিনায়ক ময়ি ওটা। ৬০ ও ৬১ মিনিটে অষ্টম ও নবম গোল হজম করে বাংলাদেশ। দুটি গোলই করেন জাপানের ফরোয়ার্ড রিরিকা তানো। অবশ্য বাকি ২৯ মিনিটে আর কোনো গোল হজম করেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। হারের জন্য আর কোনো গোলের প্রয়োজন ছিল কি?


থাইল্যান্ড/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়