প্রবাস

নিউ জার্সির আটলান্টিক সিটিতে জমজমাট ‘বাংলাদেশ মেলা’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো জমজমাট ‘বাংলাদেশ মেলা’।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির উদ্যোগে স্থানীয় সেন্ট ক্যাসেল স্টেডিয়ামে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলা’য় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের নির্মাণ ব্যবসায়ী আবদুল কাদের মিয়া।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেট পার্টির এসেম্বলিম্যান ভিনস মাজিও এবং জন আরমাটো, আটলান্টিক সিটির মেয়র মার্টি স্মল, প্লেজেন্টভিল সিটি মেয়র জুডি এম ওয়ার, নর্থফিল্ড সিটির মেয়র আরল্যান্ড চোও, এগ হারবার সিটির মেয়র লিসা, এবসিকন সিটির মেয়র কিম্বারলী হরটন আটলান্টিক সিটির প্রাক্তন মেয়র ডন গার্ডিয়ান, আটলান্টিক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র প্রাথী ডা. দাউদ পানাহ, আটলান্টিক সিটির কাউন্সিলম্যান আনজুম জিয়া, মো ডেলগেডো, আটলান্টিক সিটির কাউন্সিলম্যান সভাপতি জর্জ টিবিট এবং আটলান্টিক কাউন্টি শারীফ এরিক শেফলারসহ ডেমোক্রেট এবং রিপাবলকান পার্টির নেতৃবৃন্দ।

উদ্ভোধনী বক্তব্যে ব্যবসায়ী আবদুল কাদের মিয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশ মেলার মাধ্যমে বিদেশে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলাদেশের কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি তুলে ধরার যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে তার সঙ্গে আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে খুবই ধন্য মনে করছি। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির বিভিন্ন কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

হাজারো বাংলাদেশির এই মহামিলনে আটলান্টিক মহাসাগরের তীরবর্তী আটলান্টিক সিটির সেন্ট ক্যাসেল স্টেডিয়াম পরিনত হয়েছিল এক খন্ড বাংলাদেশে। পুরো মাঠের চারিদিকে দেশি পণ্যের সমাহার এবং দেশীয় স্বাদের আহারে ব্যস্ত ছিলেন শত শত বাংলাদেশি।

করোনার কারণে বাংলাদেশ অথবা ইন্ডিয়া থেকে নামী দামী শিল্পীরা আসতে না পারলেও এবারই প্রথম মেলার অধিকাংশ সময় প্রবাসী সংগীত শিল্পীদের গান প্রবাসীরা প্রাণ ভরে উপভোগ করেন। আটলান্টিক সিটির সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এনটিভির ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত শিল্পী নিলাদ্রী চৌধুরী, জয়ন্ত সিনহা, সায়রা রেজা, শান্তনীল, শশী এবং সুমনের গানের তালে তালে পুরো ষ্টেডিয়ামস্থল ছিল মুখরিত।

অনুষ্ঠানের মাঝে বাংলাদেশিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান এবং সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ।

জনপ্রিয় উপস্থাপক বুলবুলের প্রানবন্ত উপস্থাপনায় মেলার পরিবেশ হয়ে উঠে অতিথীদের কাছে খুবই আনন্দদায়ক।

সাংস্কৃতিক কমিটির সদস্য নিবেদিতা ভট্টাচার্যের কোরিওগ্রাফিতে ছোট ছোট মেয়েদের দেশীয় গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা ছিল দেখার মতো।

অধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম এবং অভিজিৎ চৌধুরী লিটনকে মরনোত্তর সন্মাননা প্রদান করা হয় এবং তাদের পরিবারের কাছে এই সন্মাননা পদক তুলে দেন আটলান্টিক সিটির মেয়র মার্টি স্মল।

এছাড়াও দেশে এবং প্রবাসে সামজিক উন্নয়ন খাতে অভুতপূর্ব অবদান রাখার জন্য সন্মাননা পদক গ্রহণ করেন হাজি আব্দুল কাদের মিয়া, সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি আকবর হোসাইন, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং লিডারশিপের জন্য জয়শ্রী দে, আবদুল করিম, মোহামদ করিম, গোলাম হাফিজ, মোহাম্মদ সেলিম, জামিল চৌধুরী, আলী হোসেন ফরিদ, শাহজাহান এবং জাহাঙ্গীর হোসেন ভূইয়া।

মেলায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক লাভলু আনসার, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং নিউজার্সি স্টেট কমিটির সভাপতি মো. শাহীন, আটলান্টিক সিটি বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট নেতা সালেহ আহমেদ, এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি সুমন মজুমদার, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথজার্সীর ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য মো. রহমান বাবুল, আটলান্টিক সিটি স্কুল বোর্ডের সদস্য প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান এবং শ্রমিক সংগঠন এসালের নিউজার্সির সভাপতি মো. ফারুক হোসেন, আটলান্টিক সিটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য মো. দিদার, এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির সাধারন সম্পাদক বিনোদ, পাকিস্তানী বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আমির কাশমিরী, রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা হারুন ভূইয়া, ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা তোলন, ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা আবুল হোসেন, সাংবাদিক এবং কমিউনিটি নেতা সাঈদ দোহা, আটলান্টিক সিটির সিটি হলের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স কর্মকতা মিল্টন চৌধুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা মাসুক তালুকদার, খসরু কামাল এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সাবেক সভাপতি সেলিম সুলতান।

যুক্তরাষ্ট্রের এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন শেষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথমেই অধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম এবং অভিজিৎ চৌধুরী লিটনের অকাল প্রয়াণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

মেলার আহবায়ক মো. সেলিম এবং সদস্য সচিব ফরহাদ সিদ্দিকী জানান, দীর্ঘ একটি বছর ধরে অপেক্ষায় থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটিসহ পার্শ্ববর্তী সিটিতে বসবাসরত প্রায় দশ থেকে বারো হাজার বাংলাদেশির প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরে তারা উল্লসিত।

অন্যান্য বারের মতো এবারও বাংলাদেশ মেলার মঞ্চ মাতিয়েছেন প্রবাসের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সায়রা রেজা, শান্তনীল, শশী এবং সুমন।