কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের বোনের দায়ের করা হত্যা মামলায় চার আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আগামী ১২ আগস্ট এই আদেশের শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে এ চার আসামিকে দুই দিনব্যাপী জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছে তদন্তকারি র্যাব কর্মকর্তা।
সোমবার (১০ আগস্ট) র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, যে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষিতে আদালতে নতুন করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ‘রিমান্ডের আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১২ আগস্ট আবেদনটির ওপর শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।’
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশীর সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে।
এসব মামলায় নিহত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পন করেন। মামলার শুনানিতে র্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকী চার জনকে দুই দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। বাকী দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ইতোমধ্যে চার জনকে কারাফটকে দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করেছে র্যাব। ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে র্যাবের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে।
পুলিশের দায়ের করা রামু থানার মামলায় সিনহার সহযোগী স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা রানী দেবনাথ গতকাল (৯ আগস্ট) জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। অপরদিকে টেকনাফ থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত আজ সোমবার জামিনে কারামুক্তি পান।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে সিফাতের মামলা দুটি বিবাদী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তদন্তের ভার র্যাবকে দিয়েছে।