কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের তিন সাক্ষী ও চার পুলিশ সদস্যের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১২ আগস্ট) কক্সবাজারের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড মঞ্জুর করা চার পুলিশ সদস্য হলেন— সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
অন্য তিনজন হলেন— মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ। তারা তিনজনই টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা। এরা হত্যাকাণ্ডের পর সিনহা রাশেদ খানকে ডাকাত বলে প্রচার করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক ৩টি মামলা করে। এ মামলায় নিহত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেব নাথকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে, ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ৬ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে চারটি মামলাই এখন তদন্ত করছে র্যাব। এরইমধ্যে পুলিশের তিন মামলায় গ্রেপ্তার সিফাত ও শিপ্রাকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।
সিনহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে গত সোমবার (১০ আগস্ট) রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া থেকে তিন বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব, যাদের এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় সাক্ষী করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে হাজির করে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে র্যাব। আদালত র্যাবের আবেদন আমলে নিয়ে তিনজনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই আদেশে রিমান্ডের আবেদন শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন। বুধবার তাদের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
অন্যদিকে, গত সোমবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের পক্ষ থেকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার পুলিশ সদস্যের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। যার শুনানি শেষে তাদেরও ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।