সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হচ্ছে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এ সড়কের শতাধিক পয়েন্টে বসানো হয়েছে স্টিলের বিশেষ ধরনের সোলার পোলে সড়কবাতি। সড়কে সারা রাত আলো থাকায় চলাচল অনেক নিরাপদ হয়ে উঠেছে। রাতের সৌন্দর্য্যও বেড়েছে পর্যটন শহর রাঙামাটির।
রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাপছড়ির শালবন এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপনে বদলে গেছে সড়কের চিত্র। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে ওঠে সৌর বাতি। লোডশেডিংয়ের ঝামেলা না থাকায় এসব সড়ক বাতিগুলো আলো দেয় সারা রাত। আবার সকালে সূর্যের আলোর সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় বাতি।
রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির একমাত্র মহাসড়কে রাতের বেলায় যানবাহন চলাচল নিরাপদ করতে পাহাড়ি বাঁকগুলোতে সোলার সড়ক বাতি বসানোর দাবি ছিলো দীর্ঘদিনের। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক বাতি স্থাপনে বিশেষ উদ্যোগ নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোলার সড়কবাতি বসানো হয়।
রাঙামাটি- চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্প্যাছড়ি এলাকায় অটোরিকশা যাত্রী রাহুল দাশ বলেন, আগে রাতের বেলায় এই সড়কে চলাচল করতে খুবই ভয় লাগতো। সৌর বিদ্যুতের ফলে এখন নিরাপদ।
এদিকে, রাঙামাটি সদর উপজেলার মানিকছড়ি এলাকার জিতু লাল চাকমা বলেন, রাঙামাটির সড়কে সোলার বাতি দেওয়ায় আমারা খুবই উপকৃত হয়েছি। সোলার বাতির কারণে রাতের বেলায় চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে না।
সাপছড়ির শালবাগান এলাকার অমর জ্যোতি চাকমা বলেন, এখন এ মহাসড়কের মধ্যে চলাফেরা করতে সুবিধা হচ্ছে। এখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যারা আছেন তাদের জন্য ভালো হয়েছে। কারণ রাত পর্যন্ত ব্যবসা করতে পারছেন।
রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ট্রাক ড্রাইভার মো. ছিদ্দিক বলেন, অনেকদিন পর এই সড়কে রাস্তায় সোলার লাইট দেওয়ায় আমাদের গাড়ি চালাতে খুবই সুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে এই রাস্তায় ঝুঁকিপূর্ণ মোড় রয়েছে। লাইট দেওয়ায় ভালো হয়েছে।
রাঙামাটি শহরের আসামবস্তী এলাকার নিলীমা ত্রিপুরা বলেন, লাইট দেওয়ার ফলে রাতে চলাফেরা করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। লাইটের কারণে পুরো আসামবস্তী এলাকাটি রাতের বেলায় খুব সুন্দর লাগে।
রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তর্পন দেওয়ান বলেন, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সদর উপজেলায় সোলার লাইট পোলগুলো বসানো হয়েছে। রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান বলেন, পর্যটন শহর রাঙামাটির একমাত্র মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে এবং যানবাহন ও মানুষের চলাচল রয়েছে সেসব স্থানে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে আলো পৌঁছানো হচ্ছে। রাতের আঁধারে সৌর বিদ্যুতের আলোয় নিরাপদে যানবাহন ও মানুষ চলাচল করবে।
তিনি আরও বলেন, সহযোগিতা পেলে পুরো সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নেও সৌর বিদ্যুৎ বসানো হবে।