কড়া রোদ। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চলছে লকডাউন। দুই একটা রিকশা-ভ্যান ছাড়া সড়কে কিছু নেই। অনেক দোকানপাটই বন্ধ। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাই ফিরে গেছেন ঘরে। এমন একটি অবস্থায় রাস্তায় নেমেছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী মমিন হোসেন।
বিবর্ণ শরীরে তার কিছুই নেই। যেন চামড়ার ভেতর থেকে বের হয়ে আসছে কঙ্কাল। জোড়াতালি দিয়ে তৈরি কাপড়ের ব্যাগ গলায় ঝুলিয়ে দুই একটি টাকার খোঁজে বের হয়েছেন মমিন। তিনি দাঁড়াতে অক্ষম তাই বসে বসেই হেঁটে চলেছেন।
আলাপে জানা হলো নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার হরিতকী ডাঙ্গা গ্রামে তার বাস। বাবা মৃত জামাল হোসেন। জন্মের পর পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে যান মমিন। দরিদ্র বাবা মা অনেক চেষ্টা করেও সুস্থ করতে পারেননি।
চার বছর আগে মা মারা যান। বাবাই ছিলেন শেষ আশ্রয়। তিনিও দুই মাস আগে মারা যান। ফলে আরো অসহায় হয়ে পড়েন। সেই মমিনও জেনেছেন করোনা মহামারির কথা। ছলছল চোখে বললেন, ‘এখন লকডাউন চলছে। মানুষের সমাগম নাই তাই সাহায্যও নাই, খাব কি তাও জানিনা। সমাজে আমাদের মত মানুষের কেউ খোঁজ রাখে না।’
মমিন আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের করোনা নাই, আছে পেটের খিদা। দুই এক টাকা সাহায্যের জন্য ঘুরে বেড়াই। না হয় এই লকডাউনে খাবো কি?’
তার অভিযোগ, প্রতিবন্ধী কার্ড পেলেও তিনি নিয়মিত ভাতার টাকা পাননা।
এ বিষয়ে ধামইরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধীর টাকা ব্যাংক দিয়ে থাকে। আমরা সব সময় চেষ্টা করি তারা যেন খুব সহজেই টাকা পান।’
বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।