সারা বাংলা

বনে ফিরে গেল লোকালয়ে আসা লজ্জাবতী বানরটি 

হবিগঞ্জে লোকালয় থেকে উদ্ধার হওয়া লজ্জাবতী বানরটি চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে পথ ভুলে লোকালয়ে চলে আসা বানরটি বনে ফিরে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন সাতছড়ি বন্যপ্রাণী রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন।

এর আগে দুপুরে রঘুনন্দন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তার তথ্যের ভিত্তিতে মাধবপুরের শাহপুর নতুন বাজারের লোকালয়  থেকে লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করা হয়।

রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, পথভুলে এ বানরটি বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে। স্থানীয় লোকেরা বিষয়টি প্রথমে রঘুনন্দন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানান। তিনি (রেঞ্জ কর্মকর্তা) জানালে আমরা গিয়ে লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এরপর বিকেল সাড়ে ৪ টায় উদ্যানের গহীন বনে অবমুক্ত করা হয়।

হবিগঞ্জের সন্তান সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ড. জহিরুল হক শাকিল  জানান, লজ্জাবতী বানর পৃথিবীতে প্রাপ্ত বানর গোত্রীয় প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এদের সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। লজ্জাবতী বানর বিভিন্ন আকারের হয়। এদের গড় ওজন মাত্র ১০ আউন্স। আর সবচেয়ে বড় প্রজাতির লজ্জাবতী বানর আমাদের দেশের রেমা-কালেঙ্গা ও সাতছড়িসহ গভীর অরণ্যে পাওয়া যায়। যার ওজন প্রায় ২ কেজি আর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ ইঞ্চি। এদের দেহ পশমে আবৃত, প্রজাতিভেদে গায়ের রঙ ধূসর, বাদামি, হলুদ, লাল অথবা সোনালি হয়। এরা নিশাচর হওয়ায় চোখের আকৃতি ও অবস্থান অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা ও প্রখর দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। অন্যান্য প্রাণীদের তুলনায় এদের ঘ্রাণশক্তিও তীব্র, যা তাদের শিকার ধরতে সাহায্য করে। একটি লজ্জাবতী বানর সাধারণত ১৫ থেকে ২০ বছর বাঁচে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল জানান, লজ্জাবতী বানর সাতছড়ি বনের ঐতিহ্য বহন করছে। এ বনে  প্রাণীটির বিচরণ রয়েছে। পর্যটকরা এ প্রাণীটি দেখতে বনের গহিনে প্রবেশ করেন। দেখে মনে তৃপ্তি পান। এ বনের ন্যায় রেমা-কালেঙ্গার বনেও এ প্রাণীটির বসবাস রয়েছে।