হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড়ি এলাকার পানছড়ি। এখানে দুই মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বিধবা সায়েরা বেগম। তিনি জানান, পানছড়ি ইকো রিসোর্ট কেড়ে নিয়েছে তার বেঁচে থাকার অবলম্বন।
স্বামী হারুন মোল্লাজী মারা গেছেন প্রায় ৮ বছর। স্বামী মারা যাওয়ার পর যেনো অথই কষ্টের সাগরে ভাসছেন এই নারী। জীবিকা নির্বাহে তাকে কঠোর শ্রম দিতে হচ্ছে। তারপরও এক বেলা খেলে, দুই বেলা অনাহারে থাকতে হয়। টাকার অভাবে সন্তানদের ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ করতে পারছেন না। এতে কষ্টের জীবনে তারভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতার কার্ড। পাচ্ছেন না সরকারি অন্যান্য সাহায্যও।
পানছড়িতে কথা হয় এই অসহায় নারীর সঙ্গে। সায়েরা বেগম জানান, এক সময় তার ঘরে ছিল সুখ। ছিল ধন সম্পদ। বর্তমানে কিছুই নেই। সব কেড়ে নিয়েছে পানছড়ি ইকো রিসোর্ট। সরকারি এ পতিত জমি পড়ে থাকা অবস্থায় তারা ভোগ করে সবজি ও ফল চাষাবাদে অনেক টাকা আয় করতেন। সংসারও সচ্ছল ছিলো। যুগ যুগ ধরে এখানে তারা বসবাস করে আসছিলেন। ২০১৮ সালের শেষ দিকে পানছড়ি ইকো রিসোর্টের জন্য প্রায় ২৫ একর পাহাড়ি জমি নিয়ে নেয় প্রশাসন। এ জমির মধ্যে তাদেরও প্রায় ৭ একর জমি ছিলো।
সায়েরা বেগম বলেন, উচ্ছেদের সময় আমাকে আশ্বাস দেওয়া হয় এ পাহাড়ের অন্যস্থানে জমি দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রায় আড়াই বছর অতিবাহিত হচ্ছে, কোন কিছুই পাইনি। নিজের জমি না থাকায় বর্তমানেও এখানেই একটি মাটির ঘরে বসবাস করছিলাম। নেই স্বামী। নেই বিদ্যুৎ। নেই নিরাপত্তা। তাই নিরাপত্তার জন্য কিছু দিন ধরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি গিয়ে রাত যাপন করছি।
এ অবস্থায় তিনি সরকারের কাছে বসবাস ও চাষ করার জন্য জমিসহ ঘর, বিধবা ভাতার কার্ড, আর্থিক সহযোগীতা কামনা করেছেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার তাউস মিয়া বলেন, বিধবা ভাতার কার্ড কম। তারপরও এ নারীকে কার্ড দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিলে তাকে একটি সরকারি ঘর বরাদ্দ এনে দেওয়ার চেষ্টা করব।