শরীরে শক্তি থাকতে দাপিয়ে কাজ করেছেন। কারও কাছে কখনো হাত পাতেননি। হঠাৎ একদিন বৈদ্যুতিক ফ্যানের আঘাতে একটা হাত প্রায় অচল হয়ে যায়। এখন শরীরে আগের মতো শক্তি নেই। নেই কাজ করার সামর্থ্যও। মানুষের বাড়িতে কাজ করতে না পারায়, তার আর এখন কোনো রুজি নেই। এতে খুব অসহায় হয়ে পরেছেন তিনি। খুব কষ্টে তার দিন কাটে।
বলছিলাম হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড়ি এলাকা পানছড়ি আশ্রয়ণের বাসিন্দা সজলা দেবনাথের (৫৫) কথা। সজলার স্বামী নেই। দুই মেয়ে ছিলো তাদেরও বিয়ে দিয়েছেন। এক সৎ ছেলে আছে কিন্তু বউ ছেলেমেয়ে নিয়ে সেও আলাদা থাকে। তাই সজলাকে দেখার মতো কেউ নেই।
অশ্রুসিক্ত নয়নে সজলা বলেন, ‘আমি কোনোদিন মানুষের কাছে হাত পাতি নাই। আগে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করেছি। কষ্ট করে দুই মেয়ের মানুষ করে বিয়ে দিয়েছি। এরপরও ভালোই দিন চলছিল। কোনো রকমে খেয়ে পরে চলতে পারতাম। হঠাৎ একদিন বৈদ্যুতিক ফ্যানের আঘাতে একটা হাত প্রায় অচল হয়ে যায়। এরপর শরীরে আগের মতো আর শক্তি পাই না। তাই মানুষের বাড়িতে কাজও করতে পারি না। অর্থাভাবে এখন খুব কষ্টে আছি। খাবার কিছু নাই। পানছড়ি আশ্রয়ণে কোনো রকম বেঁচে আছি। এভাবে আর কতো দিন?’
সজলা আরও বলেন, ‘কখন যে কোথায় মরে পড়ে থাকবো, বলতে পারি না। এ মুহূর্তে বিধবা বা বয়স্ক ভাতা কার্ড খুব প্রয়োজন। প্রয়োজন সরকারি একটি ঘর বা আর্থিক অনুদান। তাহলে মরার আগে কিছু হলেও শান্তি পেতাম। কিন্তু কে দেবে আমাকে ভাতা কার্ড? কে দেবে সরকারি ঘর বা আর্থিক অনুদান?’
পানছড়ির বাসিন্দারা জানান, এ নারীর স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মেয়েদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন। কষ্ট করে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। শারীরিক অবস্থা ভাল না থাকায়,এখন তিনি তেমন কোনো কাজ করতে পারেন না। দ্রুত তাকে সরকারিভাবে একটি ভাতা কার্ড করে দেওয়া হোক। এছাড়া সরকারি পাকা ঘর ও আর্থিক সহযোগিতাও দরকার তার। এসব পেলে এ বৃদ্ধা নারীর বিরাট উপকার হবে।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার তাউস মিয়া জানান, সজলা দেবনাথের বয়স ৬২ হয়নি বলে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাকে একটি বিধবা ভাতার কার্ড প্রদান করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে।