ভোলার ৯ নিখোঁজ শ্রমিকের গত ৫ দিনের সন্ধান মিলেনি। নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ সেজান জুস ফেক্টরীতে কাজ করতেন নিখোঁজ এই ৯ শ্রমিক।
নারায়ণগঞ্জের ওই অগ্নিকান্ডে মৃত্যু দুয়ার থেকে চরফ্যাশনের ১০ জন ফিরে আসলেও ফিরেনি চরফ্যাশন ও তজুমুদ্দিন উপজেলার আরোও ৯ জন শ্রমিক। এসব পরিবারের শোকের মাতম চলছে।
দূর্ঘটনার আগ পর্যন্ত এসব শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের যোগাযোগ ছিলো তবে অগ্নিকান্ডের পর থেকে তাদের সঙ্গে সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে এসব শ্রমিকদের পরিবার ও স্বজনরা দাবি করছেন।
নিখোঁজরা হলেন- চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গোলাম হোসেন মাঝি বাড়ির বাসিন্দা গোলাম হোসেনের ছেলে মহিউদ্দিন (২৫), আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড কাদির মাঝি বাড়ির বাসিন্দা ফজলুর রহমানের ছেলে হাসনাইন (১৪), একই বাড়ির কবিরের ছেলে রাকিব (২০), এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল মান্নানের ছেলে নোমান (২০), ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত হাফিজের ছেলে শাকিল (২৩), নজরুল নগর ইউনিয়নের চর নলুয়া ৯নং ওয়ার্ড ফখরুল হাওলাদার বাড়ির ফখরুলের ছেলে শামিম (১৮) ও মাদ্রাজ ইউনিয়নের তাজউদ্দিনের ছেলে মো.রাকিব।
এছাড়াও তজুমদ্দিন উপজেলার মো.ইউছুফ, ইসমাইলের মেয়ে হাফিজা বেগম রয়েছেন বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এসকল শ্রমিকরা ওই জুস ফেক্টরির সেমাই সেকশনে প্যাকেটজাতকরণ ও অন্যান্য দায়িত্বে ছিলেন।
নিখোঁজ হাসনাইনের পিতা ফজলুর রহমান বলেন, আমার ছেলে ও রাকিব এক সঙ্গে ওই ফ্যাক্টরির চতুর্থ তলায় কাজ করতো। দূর্ঘটনার সময় তাঁরা ওখানেই কর্মরত ছিলো বলেও জানান হাসনাইনের পিতা।
নজরুল নগর ইউনিয়নের শামিমের মা সুলতানা বেগম বলেন, আমার ছেলে সেমাই সেকশনে কাজ করতো। বুধবারে ছেলের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয়। তবে শুক্রবারে ছেলের এক সহকর্মীর ভাই আমাদের ফোন দিয়ে জানান শামিমের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা।
নিখোঁজ শাকিলের শ্বশুর আবু তাহের বলেন, আমার মেয়ের জামাই শাকিল এতিম ছেলে তাঁর বাবা মা বেঁচে নেই এবং তাঁর কোনো ভাই বোনও নেই। গত ৩মাস পূর্বে আমার মেয়ে শিমা আকতারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। কথা ছিলো কোরবানির ঈদে আনুষ্ঠানিকভাবে জামাই বরণ করবো। কিন্তু রুপগঞ্জ থেকে জামাইয়ের ফিরে আসেনি।
এদিকে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ হাসেম ফ্যাক্টরীর সেমাই তৈরীর সেক্টরে মোট ৪০ জন নাইট ও মর্নিং শিফটে কাজ করতেন বলে অগ্নিকান্ড থেকে ফিরে আসা শ্রমিকরা জানান। আগুনের ওই ঘটনার পর ফেরত আসেন চরফ্যাশনের ১০ জন। এর মধ্যে চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিনসহ জেলার ৩১ জন কাজ করতেন ফেক্টরির সেমাই সেকশনে। তাদের মধ্যে কতজন মারা গেছে তা এখনো বলতে পারছেন না ফিরে আসা সহকর্মীরা।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক ই লাহী চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে নিখোঁজ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই ফ্যাক্টরিতে নিহতদের শনাক্তের কাজ করা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, স্বজনদের ডিএনএ টেস্ট করার জন্য বলা হয়েছে।