সারা বাংলা

টাঙ্গাইলে দেড় মাস  ‘একঘরে’ প্রবাসীর স্ত্রী

পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে টাঙ্গাইলে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে দেড় মাস ধরে এক ঘরে করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূর সঙ্গে গ্রামের কেউ কথা বললে তাকে ১০ টাকা জরিমানার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের মাদারজানি বেপাড়ীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

 লতিফা বেগম (৪৩) নামের ওই গৃহবধূর অভিযোগ, পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ও গ্রামের মাতাব্বররা তাকে এক ঘরে করে রেখেছে। ঘর থেকে বের হলেই তার খলিল ও তার পরিবারের সদস্যরা মারধর করে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। 

তিনি জানান, তাদের বাড়ির সাড়ে তিন শতাংশ জমি নিয়ে কয়েক বছর ধরে তার চাচা খলিল, ফরহাদ হোসেন ও জলিলের পরিবারের সাথে বিরোধ চলছে। বাড়ি না ছাড়ায় লতিফা বেগম ও তার মেয়েকে মারধরও করা হয়। এ ব্যাপারে তার মেয়ে সোনিয়া বেগম ওই গ্রামের মো. খলিল বেপারির ছেলে শ্রাবণ মিয়াকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর পরও তাদের হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। গত ৯ জুলাই  খলিল, তার ছেলে বাবু, ফরহাদ হোসেন, ফরহাদের ছেলে ইমরান ও শ্রাবন, মৃত জলিলের ছেলে চান মিয়া এবং শাকিল মিয়া তাকে বেধড়ক মারধর করে। ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, জামাল মিয়া মাতাব্বর, এনামুল মাতাব্বর, শামসুল মাতাব্বর, ফরমান মাতাব্বের নেতৃত্বে শালিসী বৈঠক হলে কোনো মিমাংসা হয়নি। উল্টো দেড় মাস ধরে তাকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। তার স্বামী বিদেশ থাকায় বাজার করতে না পারায় খেয়ে না খেয়ে তিনি আতঙ্কে দিন পার করছেন। ও

লতিফা বেগম বলেন, ‘মেম্বার শফিকুল ইসলাম, জামাল মিয়া, এনামুল, শামসুল ও ফরমান আমাকে একঘরে করে রেখেছে। আমার বাড়ির রাস্তায় বেড়া দিয়ে রাখে। বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েও কোনো ফল পাইনি। উল্টো কেউ আমার সঙ্গে কথা বললে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার ঘোষণা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে যাওয়ার পথে আমাকে বাঁধা দেওয়া হয়। খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লতিফা কোনো মাতব্বারের কথা না মেনে চলায় তাকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।’

করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেকুজ্জামান চৌধুরী মজনু বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, কাউকে একঘরে করে রাখা আইনের পরিপন্থী। কোনো ইউপি সদস্য ও মাতব্বর কাউকে একঘরে করে রাখতে পারেন না।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’