গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে ফেরিযোগে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ঢাকাগামী হাজার হাজার যাত্রীর ঢল নেমেছে।
শনিবার (৩১ জুলাই) সরেজমিনে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি আর কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে হাজার হাজার শ্রমিক, পণ্যবাহী গাড়ি ও ব্যক্তিগত গাড়িকে ফেরি দিয়ে পদ্মা পার হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসে ঢাকায় যেতে দেখা গেছে। এসময় অনেকের মাঝেই স্বাস্থবিধি মানার কোনো বালাই ছিল না। ফেরিতে গাদাগাদি করেই পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন এসব যাত্রীরা। শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশের চেকপোস্ট ও ঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও যাত্রীরা নানা অজুহাতে রাজধানী ছুটছেন। তারা অসুস্থতা, করোনার টিকা গ্রহণ ছাড়াও নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে ঢাকায় যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, সড়কে ছোট ছোট যানবাহন ও মোটরসাইকেলে করে ভেঙে ভেঙে বাড়তি ভাড়াতে ফিরছে হচ্ছে যাত্রীদের। এসময় পরিবহন সংকটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাদের। অনেকে যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটে চলছেন বহুদূর।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, এ নৌরুটে ১৭টির মধ্যে ৩টি রোরো, ৫টি কেটাইপ মিলিয়ে ৮টি ফেরি সচল রেখে চলছে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার। তবে কোন লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল করছে না। ঘাট এলাকায় যেসব যানবাহন আসছে তা দ্রুত ফেরিতে উঠে যেতে পারছে। অপেক্ষমান কোনো যানবাহন নেই। তবে পদ্মা নদী উত্তাল ও প্রবল স্রোত থাকার কারণে ফেরি পারাপারের দ্বিগুণ সময় লাগছে। অন্যদিকে, সকাল থেকে যাত্রীদের অত্যধিক ভিড়ের কারণে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগির হোসেন জানান, লকডাউনকে কেন্দ্র করে শিমুলিয়া ঘাটসহ জেলার বিভিন্ন প্রবেশ পথগুলোতে আজও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট রয়েছে। জরুরি পরিষেবার গাড়ি ব্যাতীত অন্যান্য গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ফেরিতে দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা যাত্রীরা শিমুলিয়া ঘাটে এসে যাত্রীরা ঢাকায় ছুটছেন। যাত্রীপারাপারের বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় যাত্রীরা ঘাটে এসে পার হতে পারছেন। যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে আহ্বান করা হচ্ছে নিয়মিত।
মাওয়া নৌফারির ইনচার্জ মো. সিরাজুল কবির জানান, বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসতে ফেরিগুলোর সময় বেশি লাগছে। প্রতিটি ফেরিকে স্রোতের বিপরীতে ও নদীতে ৩-৪ কিলোমিটার অধিক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। গণপরিবহন, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রী চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরেও ঘাটে পারাপারে কোন গাড়ি অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না।