কুড়িগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তা বরকে নিয়ে দুই নববধূর মাঝে টানাটানির ঘটনা ঘটেছে। এমনকি দুই নববধূর পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভরতের ছড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর ভরতের ছড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জনতা ব্যাংক ভূরুঙ্গামারী শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে সদর ইউনিয়নের আব্বাস আলীর মেয়ে আশানুল আঁখিকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নববধূকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন ছানোয়ার। এসময় উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের খামার আন্ধারীঝাড় এলাকার আয়নাল হকের মেয়ে আইরিন নিজেকে ছানোয়ারের স্ত্রী দাবি করে তার বাড়িতে যান। এ নিয়ে ছানোয়ারের পরিবার ও আঁখির স্বজনদের সঙ্গে আইরিনের স্বজনদের সাথে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। ছানোয়ারকে নিয়ে শুরু হয় আঁখি ও আইরিনের টানাহেচড়া।
আখিঁর আত্মীয় স্বজন ছানোয়ারকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু অপরপক্ষ তাকে টেনে নামাতে চায়। এক পর্যায় বিষয়টি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। এলাকাবাসী উভয় পক্ষকে শান্ত করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সুরাহার উদ্যোগ নেন। এসময় আঁখির পক্ষে ভূরুঙ্গামারী ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ১০/১২ জন নেতাকর্মী এসে একটি মাইক্রোবাসে ছানোয়ার ও আঁখিকে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
আইরিনের দাবি, ছানোয়ারের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৩ জুলাই নাগেশ্বরীতে তার মামার বাড়িতে ছানোয়ারের পরিবারের সম্মতিতে রেজিস্ট্রি করে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মামার বাড়িতে দুইদিন কাটান তারা। শুক্রবার পারিবারিকভাবে তাকে ছানোয়ারের বাড়িতে তুলে নিয়ে আসার কথা ছিল। বরযাত্রী আসার দেরি দেখে ছানোয়ারকে ফোন দেওয়া হলেও সে ফোন ধরেনি।
তিনি বলেন, ‘লোক মারফত ভূরুঙ্গামরীতে তার বিয়ের কথা জানতে পারি এবং এসে দেখি নতুন বউ নিয়ে সে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে। আমি ছানোয়ারের বিয়ে করা প্রথম স্ত্রীর দাবি নিয়ে এখন তার বাড়িতে অবস্থান করছি।’
নববধূ আঁখির জানান, ছানোয়ারের সাথে তার মার্চ মাসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে কারণবশত বিষয়টি সবাইকে জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আমি শ্বশুরবাড়িতে আসি। আমিই ছানোয়ারের প্রথম স্ত্রী। ওরা (আইরিন) ছানোয়ারকে বাড়িতে চায়ের দাওয়াত দিয়ে জোর করে বিয়ের রেজিস্ট্রি করিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে ছানোয়ার কোন মন্তব্য করতে চায়নি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাবেক উপজেলা চেয়াম্যান আব্দুল হাই মাষ্টার জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বসার কথা ছিলো। তবে ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে ছানোয়ারসহ আঁখিকে নিয়ে যায়।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার বলেন, ‘আমরা কয়েকজন গিয়ে ছানোয়ার ও আঁখিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সেখানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমার জানা মতে, ছানোয়ারের সাথে আঁখির বিয়ে এক বছর আগে রেজিস্ট্রি হয়েছে।’ ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, দুজনই ব্যাংক কর্মকর্তা ছানোয়ারের বৈধ স্ত্রী। একজনকে চলতি বছরের মার্চ এবং অপরজনকে জুলাই মাসে বিয়ে করেছেন। এটা তাদের পারিবারিক বিষয়। এ বিষয়ে কোনো পক্ষই এখনও থানায় অভিযোগ করেনি।