সারা বাংলা

খুলনাঞ্চলে বৃষ্টিতে ডুবেছে আমন বীজতলা: ক্ষতি ৩৫ কোটি টাকা

আম্পান, ইয়াস ও করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খুলনা অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি। সেই সঙ্গে অতি বৃষ্টিতে খুলনাঞ্চলের ১৫ শতাংশ আমন বীজতলা ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এতে এ অঞ্চলের  ৯২ হাজার ৯৯২ জন চাষী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের কপালে এখন দুশ্চিন্তার ভাজ।

ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলো হচ্ছে খুলনা— সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট। গত ২৬-২৯ জুলাই এ অঞ্চলে ২০৪.৭ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে খুলনার কয়রা, দাকোপ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর এবং বাগেরহাটের রামপাল ও মংলা উপজেলায়। ব্রি-২২, ২৩, ৪৭, ৫২, ৭৫, ৭৬, ৮৭, ও বিনা জাতের বীজই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ধানের পাশাপাশি অতি বৃষ্টিতে ৩ হাজার ৯৩ হেক্টর জমির পান ও শাক সবজি নষ্ট হয়েছে।

বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম রাজৈর গ্রামের চাষি মো. সৈয়দ আলী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা আট দিন জলাবদ্ধ ছিল। জলাবদ্ধ থাকায় ধানের চারা পচে গেছে। নতুন পুঁজি না থাকায় বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। ডিলারের কাছে যেয়েও বীজ পাওয়া যাচ্ছে না।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের পুনর্বাসন প্রসংঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনার অতিরিক্ত পরিচালক জি এ গফুর জানান, এবারের বীজতলা তৈরিতে একটু দেরি হবে। বিএডিসির কিছু অবিক্রি ধান কৃষকদের মাঝে বিলি করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট বীজ সরবরাহ করছে। এসিআই ব্রি-৪৯ জাতের চার মেট্রিক টন বীজ কমমূল্যে সরবরাহ করেছে। যেসব উপজেলা বেশি বীজতলা হয়েছে সেখান থেকে অন্য উপজলোয় ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের মধ্যে বিতরণের প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম ৬ আগস্ট খামারবাড়ীতে পাঠানো এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, জেলার ডিলাদের অবিক্রিত ছয় মেট্রিক টন বীজ নির্ধারিত মূল্যে, ব্রি ও বিনা পাঁচ মেট্রিক টন এবং বায়ারের কাছ থেকে তিন মেট্রিক টন বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে। তালা, কলরোয়া ও দেবহাটা উপজেলার অতিরিক্ত আমনের চারা আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বৃহত্তর খুলনায় এ মৌসুমে ১৮ হাজার ৫৪২ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা হয়। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে চার দিনের টানা বৃষ্টি ও বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে ২ হাজার ৭৮৬ হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।