সারা বাংলা

যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪৯ সে.মি ওপরে, পানিবন্দি অর্ধলাখ মানুষ

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতি বৃষ্টিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। এরই মধ্যে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চলের বাড়িগুলোতেও প্রবেশ করেছে যমুনার পানি।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ।

আব্দুল লতিফ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বাড়বে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। এতে জেলার প্রায় অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ায় তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। তলিয়ে গেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, রাস্তাঘাট, বিস্তীর্ণ রোপা আমনের ক্ষেত। ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার চৌহালী ও শাহজাদপুরের নদী পারের মানুষ।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত বন্যার তেমন কোনো ঝুঁকির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কোথায়ও ভাঙন দেখা দিলে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে চেষ্টা করা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান,গত কয়েক দিনে অব্যাহত ভাবে পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের ৪ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এসব ফসলের মধ্যে রোপা আমন, বাদাম, পাট, আগাম সবজি, আখ বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি জানা আছে। নিয়মিত পানির খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।

আব্দুর রহিম আরও জানান, জেলার সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ করা টাকা ও চাল চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো সময় বিতরণ করবে। এছাড়া জেলায় ৭৬ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুত রাখা হয়েছে। যে কোনো এলাকায় ত্রাণের প্রয়োজন আছে কি না, তা নিয়মিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।