সারা বাংলা

শাহ আবদুল করিমের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

‘গাড়ি চলে না চলে না, চলে না-রে গাড়ি চলে না’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম, গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু-মুসলমান, মিলিয়া বাউলা গান, ঘাঁটু গান গাইতাম’ কিংবা ‘কোন মেস্তরী নাও বানাইলো কেমন দেখা যায়, ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ুর পঙ্খী নাও।’

এমন অসংখ্য জনপ্রিয় লোকগানের জনক শাহ আবদুল করিমের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। কিংবদন্তিতুল্য এই বাউল শিল্পী ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।  

শাহ্ আবদুল করিমের স্মৃতি বিজড়িত নানান নিদর্শন, স্মারক, পদক ও বিভিন্ন সম্মাননা রাখার জন্য হয়েছে জাদুঘর এবং হয়েছে সমাধি সৌধও। তবে তার নিজের হাতে প্রতিষ্ঠিত শাহ্ আব্দুল করিম সংগীতালয়টি আজো চালু কারা যায়নি। বহু আশ্বাসের পরও এখনো হচ্ছেনা কম্পপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজ।

একুশে পদকপ্রাপ্ত এই বাউল সম্রাট মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মানুষকে আনন্দদানের পাশাপাশি, সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা অসঙ্গতির কথা গানে গানে জানিয়ে গেছেন।  তিনি ভাষার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সময় গণসংগীত গেয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন।  বাংলার মাটির মমতায় তার বাণী ছিল পুষ্ট। গেয়েছেন দেশপ্রেম, দেহতত্ত্ব, মারিফতিসহ নিপীড়িত মানুষের মুক্তির গান। অসাম্প্রদায়িকতার গান গাওয়ার জন্য ধর্মান্ধদের হাতে নির্যাতিত ও ঘর ছাড়া হয়েছিলেন।

১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামের এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি রচনা করেন আফতাব সঙ্গীত, গণসঙ্গীত, কালনীর ঢেউ, ধলমেলা, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে ও শাহ আব্দুল করিম রচনাসমগ্র নামে জনপ্রিয় সব গানের বই।

শাহ্ আবুল করিমের একমাত্র সন্তান শাহ নূর জালাল বলেন, দেখতে দেখতেই ১২ বছর পার হয়ে গেলো। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের বাড়িতে (উজান ধল গ্রামে) যেখানে বাবা-মা শায়িত রয়েছেন সেখানে ছোট-খাটো করে বাবার মৃত্যুবাষির্কী পালন করবো।

তিনি বলেন, ধল গ্রামে আমাদের বাড়ির চারদিকে পানি থাকায় বাবার ভক্তবৃন্দদের বসতে দেওয়ার জায়গাও নাই। তারা নৌকায় থেকে থেকে গান বাজনা করবেন। শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি জাদুঘরের সামনে যে জায়গা আছে সেটিতে যদি মাটি ভরাট করা যেতো তাহলে ভক্তরা বসার জায়গা পেতো।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেল বলেন, বাউল  সম্রাটের প্রয়াণ দিবসে জেলা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে এবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। কভিড পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এখানে সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ের বাউল শিল্পীরা অংশ নিবেন।